বিদেশে কর্মী যাওয়ার শীর্ষে কুমিল্লা, কম বান্দরবান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০২৪ সালে ১০ লাখেরও বেশী বাংলাদেশী কর্মী কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছেন কুমিল্লা জেলা থেকে। সেই হিসাবে সবচেয়ে কম গেছেন বান্দরবান জেলা থেকে।
জনশক্তি ব্যবসায়ী ও অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, কুমিল্লা জেলার লোক স্মার্ট বেশি। তা ছাড়া তারা দক্ষও। তাই এ জেলা থেকে বিদেশে প্রতি বছরের মতো ২০২৪ সালেও কর্মী যাওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে অবস্থান করছে। অপর দিকে বান্দরবান জেলার মানুষ বিদেশমুখী কম। তাই এখান থেকে প্রতি বছরই কম শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের আরো নজরদারি বাড়ানো উচিত।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশে বৈধভাবে কর্মসংস্থানের জন্য ১০ লাখ ১১ হাজার ৯৬৯ জন শ্রমিক গেছেন। এর মধ্যে শুধু কুমিল্লা জেলা থেকেই গেছেন ৯২ হাজার ১১১ জন। ৫৯ হাজার ৯৯৭ জন কর্মী গিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পাশের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আর ৪৫ হাজার ৫৭৭ জন শ্রমিক পাঠিয়ে টাঙ্গাইল তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এরপর কিশোরগঞ্জ ও চাঁদপুর রয়েছে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে। অপর দিকে চট্টগ্রাম থেকে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য গেছেন ৩৮ হাজার ১০২ জন। কক্সবাজার থেকে ১৩ হাজার ৫৫৩ জন। আর বান্দরবান জেলা থেকে গেছেন মাত্র ৭৯৭ জন।
দেখা গেছে, বন্দরবান জেলা থেকে কোনো মাসেই গড়ে ১০০ জন শ্রমিকও বিদেশে যেতে পারেননি। উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম থেকে গেছেন পাঁচ হাজার ৫৩০ জন।
গতকাল রাতে এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপের (বিডি) স্বত্বাধিকারী মো: লোকমান শাহ নয়া দিগন্তকে কুমিল্লা জেলা থেকে বিদেশে বেশি শ্রমিক যাওয়ার বিষয়ে বলেন, এ জেলার মানুষ সব ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে ধৈর্যর প্রমাণ দিয়ে আসছেন। তারা যেমন স্মার্ট, তেমনই দক্ষ। এ কারণে কুমিল্লা থেকে বিদেশ যাওয়ার হার বেশি। অপর দিকে বান্দরবান জেলা থেকে সবচেয়ে কম শ্রমিক যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বেশি। তাদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা খুব কম। তাদেরকে ট্রেন্ডআপ করে বিদেশমুখী করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে বান্দরবান জেলা জনশক্তির অফিসগুলোকে আরো বেশি সক্রিয় করতে হবে। তাহলেই সেখান থেকে শ্রমিক যাওয়ার হার বাড়তে পারে।
ইউরোপের শ্রমবাজার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে লোকমান শাহ বলেন, নিয়োগকর্তাবান্ধব নীতিমালা বাংলাদেশ সরকার এখনো প্রণনয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যার কারণে পূর্ব ইউরোপে পাড়ি জমানো শ্রমিকরা এখনো ওই সব দেশে না থেকে পালিয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশে চলে যাচ্ছেন। এতে শ্রমবাজার অনেকটা হুমকিতে রয়েছে।
গতরাতে গুলশান থেকে মিজানুর রহমান নামে এক জনশক্তি ব্যবসায়ী নয়া দিগন্তকে বলেন, বিভিন্ন দেশে অনেক আগে থেকেই নোয়াখালী এবং কুমিল্লা অঞ্চলের লোক বেশি যাচ্ছেন। ওই অঞ্চলের লাইসেন্সও বেশি এবং মালিকও বেশি। এখন নতুন যারা লাইসেন্স করছেন তারাও ওই বেল্টের বেশি।