ছাগলকাণ্ডের মতিউর স্ত্রীসহ গ্রেফতার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৩, আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪০
বহুল আলোচিত ছাগলকাণ্ডে জড়িত এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে বলে জানান ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) তালেবুর রহমান। তাদেরকে দুদকের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। যদিও এ দম্পতির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সবশেষ গত ৬ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করে দুদক। ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী (লায়লা কানিজ) ও ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর মধ্যে প্রথম মামলার আসামি করা হয় লায়লা কানিজ ও মতিউর রহমানকে। মামলার এজাহারে বলা হয় আসামি লায়লা কানিজ ১৩ কোটি এক লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তার মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে দুই কোটি ৪৫ লাখ গোপন ও ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় মামলায়। ওই মামলায় মতিউর রহমানকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। আর তৃতীয় মামলায় মতিউরের প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও মতিউরকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর (শাম্মী আখতার শিবলী) বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ১২০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। প্রথম মামলায় এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউরের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও এক কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মামলায় মতিউরের সাথে আসামি হয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী। শিবলীর বিরুদ্ধে এক কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ ও দুই কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখ্য কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয় ইফাতের বাবা এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান। যদিও প্রথমে মতিউর তার সন্তান ইফাতকে অস্বীকার করে বলেছিলেন, ‘ছাগলকাণ্ডের সাথে জড়িত ওই ছেলে তার সন্তান নয়’। পরে স্বীকার করলে একে একে বেরিয়ে আসে তার ও পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পদের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত বছরের ৪ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দু’টি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইলফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়। ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। গত ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা