কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের উদ্বেগ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৬
ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই)। বিভিন্ন খাতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে। একই সাথে এটি বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ বিনিময় হার, আমদানি খরচ বৃদ্ধি, উচ্চ জ্বালানি ব্যয়, উচ্চ সুদের হার ও বৈশ্বিক প্রভাব দেশের বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে এফবিসিসিআই।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। মূলত নিয়ম বহির্ভূতভাবে পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, সরকার যেখানে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে সেখানে অংশীজনদের সাথে কোনো মতবিনিময় ছাড়াই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের (এফবিসিসিআই) আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসেই শতাধিক পণ্য ও সেবার উপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে সরকার গত ৯ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করেছে। অংশীজনদের সাথে আলোচনা না করেই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। হঠাৎ এ কর আরোপ এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের সার্বিক জাতীয় অর্থনীতির উপর প্রচণ্ডভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় এগিয়ে নিতে যে মুহূর্তে সরকার, ব্যবসায়ী সমাজসহ সবাই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি- সে সময়েই অস্বাভাবিক হারে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার গতিকে থমকে দেবে।
এমন সিদ্ধান্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব ধরনের রেস্তোরাঁর বিলের ওপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট বাড়ানোর পাশাপাশি দোকান ও সুপার মার্কেটে বিক্রয়ের উপরও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তা ছাড়াও আমদানি করা ফল, মোবাইল ফোন সেবা, ইন্টারনেট, টিস্যু, এলপিজি গ্যাস, পোশাক প্রভৃতির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন হারে মূসক বাড়ানো হয়েছে। যেহেতু এসব পণ্য ও সেবা জীবনযাত্রারই সার্বক্ষণিক অনুষঙ্গ সেজন্য অতিরিক্ত কর বৃদ্ধির ফলে সব আয়ের মানুষের ওপর এর চাপ পড়বে। জীবনরক্ষাকারী ওষুধের ওপরও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, অর্থবছরের মাঝখানে এসে হঠাৎ করে ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে এবং বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো: ওসমান গনি, বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক, এফবিসিসিআই সদস্য আতিকুর রহমান প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা