১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১২ রজব ১৪৪৬
`

হজ চুক্তি স্বাক্ষর : সর্বনিম্ন কোটা ১০০০ বহাল

২০২৫ সালের হজ চুক্তিতে সই করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ ও সৌদি হজমন্ত্রী তৌফিক বিন ফাওজান : নয়া দিগন্ত -

সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের ২০২৫ সালের হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এই দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং সৌদি আরবের পক্ষে সে দেশের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক বিন ফাওজান আল রাবিয়াহ হজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক হজ ব্যবস্থাপনার অগ্রগতি নিয়ে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন। এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশী হজ এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা এক হাজার হতে কমানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। কিন্তু সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী এজেন্সিপ্রতি সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা এক হাজারই বহাল রেখেছেন।

জানা যায়, গত বছরের অক্টোবরে সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রীকে এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর কোটা দুই হাজার থেকে কমিয়ে ২৫০ জন করার অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের জন্য বাংলাদেশী এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর ন্যূনতম কোটা দুই হাজার হতে কমিয়ে এক হাজার জন নির্ধারণ করে। তবে আগামী বছর এই কোটা হবে দুই হাজার জন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দেলোয়ার হোসেন, কনসাল জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ মাইনুল কবির, কাউন্সিলর (হজ) মো: জহিরুল ইসলাম ও উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদসহ সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কোটা কমাতে প্রধান উপদেষ্টাকে এজেন্সি মালিকদের স্মারকলিপি : এজেন্সি-প্রতি হজযাত্রীর কোটা সর্বনিম্ন ৫০০ জন বহাল রাখা ও হজ ব্যবস্থপনায় বিদ্যমান জটিলতা নিরসনের দাবিতে পদযাত্রা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকরা। গতকাল কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরুর পর প্রধান বিচারপতির বাসভবনের মোড়ে এলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে সেখানে পদযাত্রা শেষ করে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়। এতে তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হজের মতো স্পর্শকাতর জনগুরুত্বপূর্ণ খাতটিও মহা সঙ্কটে নিমজ্জিত হয়। সঙ্কট উত্তরণে আপনার আন্তরিক সহযোগিতা এ মুহূর্তে অতীব জরুরি। আপনার দক্ষতা ও বিশ্বব্যাপী গৌরবোজ্জ্বল গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে, কূটনৈতিক চ্যানেলে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান প্রত্যাশা করছি।

তারা আরো বলেন, ২০২৫ সালের হজে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাদের পবিত্র ফরজ ইবাদত সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রতিনিয়তই প্রবল হয়ে উঠছে। প্রায় ৮২ হাজার হজযাত্রী ও এজেন্সি মালিকরা চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভোগছেন। আমরা জাতীয় হজনীতি অনুযায়ী এজেন্সি-প্রতি কোটা চাই এবং শুধু ২০২৫ সালের জন্য ঘোষিত ৫০০ জনের কোটা বহাল চাই।

স্মারকলিপিতে রোড টু মক্কা বাতিলের দাবি জানিয়ে বলা হয়, অদূরদর্শী নেতৃত্ব রোড টু মক্কা নামের অপ্রয়োজনীয় হয়রানির এক হাতিয়ার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। যার কারণে নানা সমস্যা, ভোগান্তি ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু ও সহজ হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আমরা রোড টু মক্কা বাতিলের মাধ্যমে পরিত্রাণ চাই।

এ ছাড়া যৌক্তিক ও ন্যায্য বিমান ভাড়া নির্ধারণের মাধ্যমে হজ প্যাকেজ মূল্য আপামর জনতার সাধ্যের মধ্যে সহনীয় পর্যায় নির্ধারণ, হজযাত্রী পরিবহনে মধ্যপ্রাচ্যগামী সব থার্ড ক্যারিয়ার উন্মুক্ত করে প্যাকেজ মূল্য ও প্যাকেজের সময় কমিয়ে আনা এবং প্রত্যেকটি অপারেটিং এজেন্সির প্রতিনিধি অবাধে সৌদি আরবে গমন করে হাজীদের বাড়িভাড়া, তাঁবুভাড়া, ট্রান্সপোর্টেশন ও মোয়াল্লিমদের সাথে সার্ভিস চুক্তি সম্পাদন করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য এজেন্সি মালিকদের মাল্টিপল বিজনেস ভিসা এবং হজ মৌসুমে বার কোড ভিসা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, হাবের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার, সাবেক মহাসচিব লায়ন এম এ রশিদ শাহ সম্রাট, বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকদের আহ্বায়ক মো: আখতার উজ্জামান, সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী, হাবের সাবেক সহসভাপতি এ এস এম ইব্রাহিম, সাবেক ইসি সদস্য আকবর হোসেন মঞ্জু ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement