নাফিজ পরিবারের বাড়ি-জমি-১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ
সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ- আদালত প্রতিবেদক
- ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১১
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ, ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থাকা ১৮টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া নাফিজ সারাফত ও আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে থাকা জমিসহ বাড়ি, প্লটও ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো: জাকির হোসেন (গালিব) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন এ তথ্য জানান। একই দিনে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ময়মনসিংহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদের তিনটি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে নাফিজ সারাফতের নামে গুলশানের ২০তলা একটি বাড়ি, গুলশানের অপর একটি বাড়ি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজারের চারটি, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় একটি এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জের দু’টি প্লট, বাড্ডার কাঁঠালদিয়ার আড়াই কাঠা, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ১০ কাঠা করে ২০ কাঠা, গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি, নিকুঞ্জরের জোয়ার সাহারায় ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ জমি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউক পূর্বাচল প্লটে সাড়ে ৭ কাঠা জমি রয়েছে।
আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়িসহ জমি, পান্থপথে একটি, গুলশান লিংক রোডে একটি, মিরপুর ডিওএইচএস এ একটি, শাহজাদপুরে একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে তিন কাঠা জমি, বাড্ডার কাঠালদিয়া আড়াই কাঠা নাল জমি ও গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ চালা জমি রয়েছে।
রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে বনানীতে থাকা তিনটি ও বারিধারায় থাকা চারটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের অনুসন্ধান টিমের প্রধান কমিশনের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সারাফত ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সাথে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগের ওপর অনুসন্ধান চলমান। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চৌধুরী নাফিজ সারাফত, আঞ্জুমান আরা শহিদ ও চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং তারা পলাতক রয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জন করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাতের জন্য চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব স্থাবর সম্পত্তি অবিলম্বে ক্রোক করা আবশ্যক। দুদেকর পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে তাদের এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ
এ দিকে গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো: জাকির হোসেন (গালিব) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ময়মনসিংহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদের তিনটি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে দুদকের পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে কমিশনের উপপরিচালক মোহা: নুরুল হুদা ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, শরীফ আহমেদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানকালে তার নিজ নামে এবং পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়; যা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ মর্মে প্রতীয়মান হয়। শরীফ আহমেদ তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রূপান্তরের মাধ্যমে নিজের ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
সূত্রে জানা গেছে, শরীফ আহমেদের দু’টি ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির আগে সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে কমিশনের কার্যক্রম ব্যাহত হবে। অবিলম্বে তার অর্জিত অস্থাবর সম্পদগুলো অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের করপোরেট শাখা দুই হিসাবে ১ কোটি করে দুই কোটি টাকা এবং সোনালী ব্যাংকের জাতীয় সংসদ ভবন শাখায় এক কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৭০ টাকা শরীফ আহমেদের নামে রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা