০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`

প্রেস কাউন্সিলের আর দরকার নেই : সংস্কার কমিশন চেয়ারম্যান

-


দেশের প্রেস কাউন্সিল একেবারেই অকার্যকর হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ। প্রেস কাউন্সিল তার কার্যকারিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে উলেখ করে তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিল অতীতে সরকারের দফতরে পরিণত হয়েছিল। দেশে প্রেস কাউন্সিলের আর প্রয়োজন নেই। এই প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এটি থাকার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এর বিলোপ ঘটিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা দরকার, যা আগামী দিনে কার্যকরী হবে এবং এর মাধ্যমে সাংবাদিকতার সব বিষয়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়া হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গতকাল অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাথে তিন পার্বত্য জেলায় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ এ কথা বলেন।
সভায় কমিশনের সদস্য বেগম কামরুন্নেসা হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা সবুজ উপস্থিত ছিলেন। রাঙ্গামাটি তথ্য অফিসের উপপরিচালক অমীয় কান্তি খীসা, কমিশনের সদস্যসচিবসহ এ সভায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি খাগাছড়ি ও বান্দরবান জেলার ২৫টি উপজেলার সাংবাদিকরা উপস্থিত থেকে যেসব সুপারিশ তুলে ধরেন তাদের অন্যতম হলো, সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত থেকে সংবাদমাধ্যমকে মুক্ত রাখতে হবে।
বিগত সময়ে যেসব সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। যেসব ভুয়া পত্রিকা নিবন্ধিত হয়ে ডিএফপির তালিকাভুক্ত হয়েছে সেগুলোকে বাদ দিতে হবে। পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগদান করতে হলে সাংবাদিকতায় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বা সাংবাদিকতায় পেশাগত ডিগ্রি থাকতে হবে।

প্রেস ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে সাংবাদিকদের একক রেজিস্ট্রেশন নাম্বার প্রদান ও তাদের সরকারি পরিচিতি নিশ্চিত করতে হবে। ফলে একজনের একাধিকবার সরকারি সুবিধা প্রাপ্তি বন্ধ হবে।
পিআইডিকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনকে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনলে সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।
কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, সংবাদপত্রকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার জন্য এ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশনের প্রধান লক্ষ্য থাকবে সংবাদ প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের সম্পাদকীয় নীতিমালা নেই। সারা দেশে সম্পাদকীয় মান অভিন্ন ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড থাকা উচিত, সব প্রতিষ্ঠান মেনে চলবে ন্যূনতম সাংবাদিকতার নৈতিকতার দিকগুলো- সেরকম কোনো কিছু নেই।
কমিশন প্রধান বলেন, দেশে নিয়মের তেয়াক্কা না করে একের পর এক টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল, প্রিন্ট ভার্সন বা অনলাইন রেডিওর অনুমতি দেয়া হয়েছে। ফলে একই খবর ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে পাঠক ভিন্ন কোনো মত বা বৈচিত্র্য পাচ্ছেন না। এগুলোর সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত বা সুপারিশ কমিশনের কাছে পৌঁছানো যাবে। সবার মতামত বিবেচনা করে কিভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার আনা যায় এ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ পেশ করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement