ডিসেম্বরে কমলেও দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ ছুঁইছুঁই
শহরে সাড়ে ১৩ শতাংশের বেশি- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১১
দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরে এসে কিছুটা কমেছে। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশে, যা নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তবে জাতীয়সহ গ্রাম ও শহরের মানুষকে এখনো বেশ চড়া দামে খাদ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। যদিও খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার নগণ্য পরিমাণে কমেছে, তবুও এটি এখনো ১৩ শতাংশকে ছঁুইছুঁই করছে। তবে শহরে এই হার এখনো ১৩.৫৬ শতাংশ। অন্য দিকে, মূল্যস্ফীতির নিচে চাপা পড়ে আছে গড় মজুরি হার, যা ডিসেম্বরে সামান্য বেড়ে ৮.১৪ শতাংশে অবস্থান করছে বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য থেকে জানা গেছে।
বিবিএস গতকাল তাদের ওয়েবসাইটে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি হারের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। আগস্টে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০.৪৯ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমেছিল। ওই মাসে ছিল ৯.৯২ শতাংশ। অক্টোবরে ফের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। ওই মাসের শেষে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। নভেম্বরে এটি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১.৩৮ শতাংশে।
তথ্যে বলা হয়েছে, নভেম্বরের’২৪ তুলনায় ডিসেম্বরে’২৪ মূল্যস্ফীতির হার কমলেও, বছর—বছর বিবেচনায় মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায়ও গত ডিসেম্বর মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যে দেখা গেছে, শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ মূল্যস্ফীতির কারণে বেশি কষ্টে আছে। গ্রামীণ এলাকায় ডিসেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি শহর অঞ্চলের তুলনায় বেশি ছিল। সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার গত ডিসেম্বর শেষে ১০.৮৯ শতাংশে, যা নভেম্বরে ছিল ১১.৩৮ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৯.৪১ শতাংশ। আর খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরে ১২.৯২ শতাংশ, যা নভেম্বরে ১৩.৮০ শতাংশ ছিল। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে এ হার নভেম্বরে ৯.৩৯ শতাংশ থেকে সামান্য কমে ডিসেম্বরে ৯.২৬ শতাংশে এসেছে।
গ্রামের মানুষও ভালো নেই : বিদায়ী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ১১.০৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত নভেম্বরে ছিল ১১.৫৩ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এই হার ছিল ৯.৪৯ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি গত নভেম্বরে ১৩.৪১ শতাংশ থেকে কমে ডিসেম্বরে এসে ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছর ২০২৩ সারের ডিসেম্বরে ছিল ৯.৬৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরে কমে ৯.৬৫ শতাংশ হয়েছে, যা নভেম্বরে ছিল ৯.৭২ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৮.৪১ শতাংশ।
শহরে খাদ্যপণ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি : বিদায়ী ডিসেম্বর শেষে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ১০.৮৪ শতাংশ, যা গত নভেম্বরে ছিল ১১.৩৭ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৯.১৫ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বরে কমে ১৩.৫৬ শতাংশে এসেছে, যা নভেম্বরে ছিল ১৪.৬৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৯.৪৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরে কমে ৯.১৭ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৯.৩১ শতাংশ। তবে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ছিল ৮.৩৯ শতাংশ।
মজুরি হার মূল্যস্ফীতির চাপে : বিবিএস বলছে, ডিসেম্বর’২৪ শেষে জাতীয় পর্যায়ে মজুরি হার (সাধারণ) হয়েছে ৮.১৪ শতাংশ (পয়েন্ট—টু—পয়েন্ট), যা নভেম্বরে ছিল ৮.১০ শতাংশ। কিছুটা হলেও বেড়েছে। ডিসেম্বরে কৃষি, শিল্প, সেবাÑ তিন খাতে মজুরির হার কিছুটা বেড়েছে। মজুরির হার পয়েন্ট—টু—পয়েন্ট ভিত্তিতে কৃষিতে ৮.৩৯ শতাংশ, শিল্পে ৭.৭৭ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৪৩ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল কৃষিতে ৮.৩৬ শতাংশ, শিল্পে ৭.৭৩ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৪০ শতাংশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা