০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`

চিরনিদ্রায় শায়িত প্রবীর মিত্র

-

চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র (হাসান ইমাম)। গতকাল বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে তাকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে এফডিসি ও চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজ ও শ্রদ্ধা জানান দীর্ঘ দিনের সহকর্মীরা।
প্রথমে এফডিসিতে বর্ষীয়ান এ অভিনেতার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। বেলা পৌনে ২টায় এফডিসি থেকে লাশ নেয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। এরপর সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঙ্গীতশিল্পী খুরশীদ আলম, ফুয়াদ নাসের বাবু, অভিনয়শিল্পী খাইরুল আলম সবুজ, মিশা সওদাগরসহ মরহুমের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। এর আগে রোবার দিবাগত রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তারা হলেন, মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। এর মধ্যে সামিউল মারা গেছেন। আর স্ত্রী অজন্তা মিত্র মারা গেছেন ২০০০ সালে।
এফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর বলেন, প্রবীর মিত্র যখন বিয়ে করার সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তখন তার নাম রাখা হয় হাসান ইমাম। ওনার ছেলের নামও কিন্তু ইসলাম ধর্মমতেই রাখা হয়েছে। উনি মুসলিম, তাই জানাজা এবং ইসলাম ধর্মমতে ওনাকে দাফন করা হচ্ছে।

এফডিসিতে প্রবীর মিত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর কাতারে ছিলেন আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, শাহীন সুমন, চয়নিকা চৌধুরী, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, অভিনেতা বাপ্পি চৌধুরী, ডিএ তায়েব, নায়িকা মুক্তিসহ আরো অনেকে।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশন, চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)।
চিত্রনায়িকা মুক্তি বলেন, আমাদের শিল্পীদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্কটা আরো শক্ত হওয়া উচিত। আমরা যখন একসাথে কাজ করি, তখন সবাই সবার সাথে থাকি, পাশে থাকি। কিন্তু কেউ অসুস্থ হলে অনেকসময় আর খেঁাজ রাখি না। এটা হওয়া উচিত নয়।
জানাজার আগে প্রবীর মিত্রের বড় ছেলে মিথুন সবার উদ্দেশে বলেন, আমার বাবার কোনো কথা বা আচরণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে মাফ করে দেবেন।

চ্যানেল আই প্রাঙ্গণ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় মরহুমের লাশ। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন এই অভিনেতা।
১৯৪০ সালে চাঁদপুরে জন্ম নেয়া প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)।
স্কুলজীবনে প্রথমবারের মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে প্রহরীর চরিত্রে অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তী সময়ে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার।
প্রায় চার দশকের অভিনয়জীবনে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেন তিনি। সবশেষ এসডি রুবেলের পরিচালনায় ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ে জন্য পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান; ২০১৮ সালে পান আজীবন সম্মাননা।


আরো সংবাদ



premium cement