সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা বাড়ল চার গুণ
- খালিদ সাইফুল্লাহ
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৭
বেসরকারি এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ নয়; এক হাজার নির্ধারণ করে দিয়েছে সৌদি সরকার। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন এজেন্সি মালিকরা। গত বছর সর্বনিম্ন কোটা ছিল আড়াই শ’। তারপরও অনেক এজেন্সি সেবা প্রদানে সমস্যায় পড়েন। এ কারণে এজেন্সি মালিকরা এবার ১০০ থেকে ২৫০ করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সৌদি সরকার গতবারের চেয়ে চারগুণ বেশি সংখ্যা নির্ধারণ করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা। অন্তর্বর্তী সরকারকে এ ব্যাপারে সৌদির উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় আগামী হজে মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
এ বছরের হজে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি সরকার। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ নিবন্ধন করেছেন প্রায় ৮৪ হাজার জন। ফলে এখনো ৪৩ হাজার কোটা খালি রয়েছে। প্রায় ৫০০ এজেন্সি এবার হজ কার্যক্রমে অংশ নেয়। তবে প্রথমে ৫০০ হজযাত্রী নিয়ে লিড এজেন্সি গঠনের আহ্বান জানালে ১৪৬টি এজেন্সি গঠিত হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হতে বাংলাদেশী হজ এজেন্সি প্রতি নূন্যতম হজযাত্রীর কোটা প্রথমে দুই হাজার নির্ধারণ করে দেয়া হয়। পরে বাংলাদেশ থেকে আবেদন করলে কমিয়ে এক হাজার জন নির্ধারণ করা হয়। গত ৯ ডিসেম্বর সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশকে এ তথ্য জানিয়ে দেয়া হয়। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের কারণে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এজেন্সি প্রতি নূন্যতম হজযাত্রীর কোটা প্রথমে ২৫০ জন ও পরে ৫০০ জন করার বিষয়ে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রীকে দুটি আধা সরকারি পত্র দেন। কিন্তু সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এ—সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কমিটির কাছ থেকে হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে সম্মতি মেলেনি। এ কারণে এবার এক হাজার জনের কোটাই বহাল থাকছে।
এ পরিস্থিতিতে গত ৪ জানুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম অডিটোরিয়ামে হজ পরিচালনাকারী এজেন্সি মালিক ও পরিচালকদের সাথে মতবিনিময় সভা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ সভায় হজ এজেন্সি মালিকরা ধর্ম উপদেষ্টার সামনে ব্যাপক হট্টগোল করেন। তারা হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন।
এজন্য গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে তার যমুনা কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ধর্ম উপদেষ্টা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টাকে ২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি হজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হজ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনাও দেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গতবারের চেয়ে চারগুণ বেশি সংখ্যক হজযাত্রী অপারেট করার খবরে হতাশ হয়ে পড়েছেন এজেন্সি মালিকরা। তারা বলছেন, এতে হজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী নয়া দিগন্তকে বলেন, আগে ৫০০ জন বলার পরও সমস্যা দেখা দেয়। এখন এক হাজার হজযাত্রী নিয়ে লিড এজেন্সি করতে অনেক সমস্যা দেখা দেবে। ২০—৩০টি এজেন্সির হজযাত্রী এক জায়গায় করলে সেবার ব্যাঘাত ঘটবে। এতে হজ ব্যবস্থাপনায় হ য ব র ল অবস্থা তৈরি হতে পারে।
হাবের প্রতিষ্ঠাতা সহ—সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার বলেন, এক হাজার কোটার কথা জেনে আমরা হতাশ। যেখানে ৫০০ জনের কোটা নিয়ে কাজ করা অনেক কষ্টদায়ক সেখানে এক হাজার কোটা নিয়ে কাজ করা প্রায় অসম্ভব।
এদিকে কোটা সঙ্কট উত্তোরণে করণীয় নির্ধারণ ও দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় বিজয়নগরের একটি হোটেলে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা