মনের সংস্কার ছাড়া কোনো সংস্কারে কাজ হবে না
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫০
সবাইকে পুরনো মনমানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, সব সংস্কারের বড় সংস্কার হলো নিজেকে, নিজের আত্মাকে সংস্কার করা। নিজের মনকে সংস্কার করা। আমাদের মন-মগজের যদি সংস্কার না হয়, তবে এই সংস্কার আখেরে ভালো কিছু বয়ে আনবে না। সিইসি বলেন, আমি প্রায়ই বলি, আমাদের যারা বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসনে যাচ্ছে, আন্দোলন করছে, তাদের বঞ্চনার তথ্য তুলে ধরছে। দেশের ১৮ কোটি বঞ্চিত মানুষ কোথায় যাবে? নির্বাচন কমিশন ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষদের বঞ্চনার কষ্ট ঘোচাতে চায়।
জাতিকে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়াটাই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচন কমিশন ভোটারদের এতো দিনের বঞ্চনার কষ্টগুলো ঘোচাতে চায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সিইসি।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) গতকাল ‘প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি)’ কার্যক্রম উদ্বোধন করার সময় সিইসি নাসির উদ্দীন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।
সিইসি নাসির বলেন, দেশের একটা ক্রান্তিলগ্নে নতুন সরকার ক্ষমতা নিয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ধরনের সরকার ক্ষমতা নিয়েছে। আমরাও কিন্তু এই ক্রান্তিকালীন সময়েরই একটা নির্বাচন কমিশন। দেশবাসীর প্রত্যাশা, এই সরকারের ওপরও যেমন খুব বেশি, আমাদের কাছেও কিন্তু প্রত্যাশাটা খুব বেশি। গতানুগতিক পদ্ধতিতে কাজ করার সুযোগ নেই।
নাসির উদ্দিন বলেন, ১৮ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পেশাদারত্বের সাথে কাজ করতে হবে। কাজ করতে গিয়ে কমিশন ইচ্ছাকৃত ভুল করবে না। অতীতকে বদলে দিয়ে বিদ্যমান চাহিদার সাথে খাপ খাওয়ানোর মতো করে সংস্কার আনার জন্য ১৫টি সংস্কার কমিশন কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সরকারি সংস্কার করতে গেলে বিধিবিধান, আইনকানুন বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে হয়। আইনকানুন বিধি-বিধানে আটকে থাকলে অনেক কাজ এগিয়ে নেয়া যায় না। সংস্কার কমিশন যখন সংস্কারের সুপারিশগুলো দেবে, তখন সেগুলো বাস্তবায়নে বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে হবে।
ইসি আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ভোটে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বের সাথে কাজ করতে হবে। নির্ভুল ভোটার তালিকা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত বলেও মনে করে কমিশন। এ সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং তৎপরতার সাথে কাজ করার নির্দেশ দেন।
অপর কমিশনার তাহমিনা আহমদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশনের হাতিয়ার হবে আইন ও বিবেক। ইসির কোনো কর্মকর্তা দুরভিসন্ধিমূলক কাজ করলে সেই দায় কমিশন নেবে না।
কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, নির্বাচন যেভাবে কলুষিত হয়েছে তা পুনরুদ্ধারে যা যা করা লাগে তার সবটুকুই করবে কমিশন। ভোটার তালিকা হালনাগাদে অনিয়ম, অবহেলা অস্বচ্ছতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, টাকা অর্জনের মোটিভ নিয়ে যেন কেউ ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্তির কাজে অংশগ্রহণ না করে। মৃত ভোটার, ভুয়া ভোটার এবং নতুন ভোটার সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ভোটের প্রতি মানুষের যে অনাগ্রহ সেখান থেকে এবার বেরিয়ে আসতে পারবে কমিশন। মানুষের মধ্যে যে আস্থার ঘাটতি ছিল তা কমে এসেছে, মানুষ এবার ভোট দিতে চায়। ভোটকে কেউ যাতে নষ্ট করতে না পারে তা এবার কাজে লাগানো হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা