২০২৪ সালে ৬৩৫৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৫৪৩ জন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৯
২০২৪ সালে ৬ হাজার ৩৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত ও ১২ হাজার ৬০৮ জন আহত হয়েছেন।
রেলপথে ৪৯৭টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৩১৫ জন আহত হয়েছেন।
নৌপথে ১১৮টি দুর্ঘটনায় ১৮২ জন নিহত, ২৬৭ জন আহত এবং ১৫৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এই সময়ে ২ হাজার ৩২৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৫৭০ জন নিহত ও ৩ হাজার ১৫১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ৯৭৪টি দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ২৩৭ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে প্রতি বছরের মতো এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে দেখা যায়, ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৩৫৯টি সড়কে দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত, ১২ হাজার ৬০৮ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনা ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, নিহত ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আহত ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে।
বিগত ১০ বছরে মোটরসাইকেল ১৫ লাখ থেকে ৬০ লাখে উন্নীত হওয়ায় নতুন করে ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় নামার পাশাপাশি ছোট যানবাহন অবাধে বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ভয়াবহভাবে বাড়ছে।
২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১৬৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৯৫২ জন চালক, ১ হাজার ৮৭৯ জন পথচারী, ৬২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী, ১২৬ জন শিক্ষক, ১ হাজার ২০৬ জন নারী, ৬৫৮ জন শিশু, ৪৮ জন সাংবাদিক, ১৭ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ১ জন চিত্রনায়ক, ৬ জন আইনজীবী ও ১২ জন প্রকৌশলী এবং ২১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এর মধ্যে ৩৯ জন পুলিশ সদস্য, ২১ জন সেনাসদস্য, ৫ জন আনসার সদস্য, ১ র্যাব সদস্য, ১ জন ফায়ারসার্ভিস সদস্য, ১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২১ জন সাংবাদিক, ৭২৭ জন নারী, ৫৩৬ জন শিশু, ৪৩৪ জন শিক্ষার্থী, ৯৯ জন শিক্ষক, ১ হাজার ৩৭২ জন চালক, ২৬৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮ জন প্রকৌশলী, ৪ জন আইনজীবী, ১১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১৫ জন চিকিৎসক ও ১ হাজার ৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে।
এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৯ হাজার ৭১৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বাস, ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৬ দশমিক ২১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বাড়লেও এসব সংবাদ গণমাধ্যমে কম আসছে বলে প্রকৃত চিত্র তুলে আনা যাচ্ছে না।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সরকার বদল হলেও পরিবহনের কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে কেবল, ফিটনেসহীন যানবাহন সড়কে চলছে, আইনের অপপ্রয়োগ চলছে, বিআরটিএ রাজস্ব আদায়ে ব্যস্ত, ট্রাফিক বিভাগ জরিমানা আদায়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার যাবতীয় উপাদান সড়কে বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেবল সভা-সমাবেশে, বক্তৃতা-বিবৃতি আর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সমাজ উন্নয়ন কর্মী আবদুল্লাহ আল-জহির স্বপন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, সদস্য ও দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের মো. জিয়াউল হক চৌধুরী প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা