সময়ের স্বল্পতা থাকলেও কাগজ ও ছাপার মানে ছাড় দেয়া হচ্ছে না
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
নতুন বছরের প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তবে এর যৌক্তিক কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন ও মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এবার আমাদের হাতে সময়ের স্বল্পতা ছিল তবে বইয়ের কোনো সঙ্কট থাকবে না। এ জন্য একটু সময় আমাদের দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই পাঠ্যবইয়ের কাগজের এবং ছাপার মান নিয়ে কোনো আপস বা ছাড় দেইনি। তাই হয়তো বই ছাপায় সময় একটু বেশি লাগছে। তবে আমি সময়ের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো ডেটলাইন বলবো না। চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব সব শিক্ষার্থীর হাতেই সব বই পৌঁছে দেয়া হবে।
উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রথম যখন কাজ শুরু করা হয়েছিল, সেটা অনেক দেরিতে হয়েছে। অনেকগুলো বই পরিবর্তন পরিমার্জনও করতে হয়েছে। এ জন্য এ বছর সময় একটু বেশি লাগছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে কবে নাগাদ সব বই পৌঁছবে এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলছেন ১৫ জানুয়ারি, আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই দেয়া যাবে। এখানে আমি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কমিটমেন্ট দেবো না। পাঠ্যবই কবে ছাপা শেষ হবে এই বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলবো না। ছাপার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে কিছু কথা বলবো। আমি মনে করি, পাঠ্যবই ছাপার কাজটা এবার শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের মতো হয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রথম সমস্যাটা হলো, আমরা বিদেশে বই ছাপাবো না। তার পর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে অনিবার্য কারণে, তাতে বইয়ের সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পরিমার্জন বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, রাজনীতিতে নিরপেক্ষ বলে কিছু থাকে না, দলীয় রাজনীতি নিরপেক্ষ সব কিছু যেন বইয়ে থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বই ছাপার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিশুদের কাছে বই যাবে, সেটা ভালো কাগজে ছাপা না হলে তো হয় না। সে জন্য উন্নতমানের ছাপা, উন্নতমানের কাগজ ও মলাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, কাগজের মান ঠিক রাখা এবং আমাদের বই ছাপানোর কাজ বাদ দিয়ে যাতে নোট বইয়ের ছাপার কাজ না হয়, সে বিষয় তদারকির জন্য ঢাকার শিক্ষকদের পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টিমের মাধ্যমে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘বই ছাপানোর কাজে পদে পদে ষড়যন্ত্র ছিল, যা অতিক্রম করা হয়েছে। আজও কোনো কোনো জেলায় ষড়যন্ত্র করে বই আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। বই ছাপানোর কাজে অনেক প্রেসের মালিক, কাগজ উৎপাদনকারী সংস্থা বর্তমানের কম মূল্যে কাগজ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এখনই সব বই ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছাতে না পেরে আমি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এবং তাদের অভিভাবকদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করছি। সান্ত্বনা এতটুকুই বইগুলো আগের চেয়ে সুন্দর হবে এবং বছরের মাঝখানে মলাট ছিঁড়ে যাবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিলকিস জাহান রিমি, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা