নতুন বই পেয়ে খুশি খুদে শিক্ষার্থীরা না পাওয়ার কষ্টও অনেকের
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
কনকনে শীতে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিত। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দেখা মিলছে রোদের। এরই মধ্যে নতুন বই হাতে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। বই পেয়ে সহপাঠীদের সাথে নিয়ে কেউ মাঠে আবার কেউ স্কুলের বারান্দায় বসে নতুন বইয়ের পাতা উল্টিয়ে দেখছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তবে বিপরীত চিত্রও রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই বই না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছে।
বছরের প্রথম দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরবরাহ করা হয়েছে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবই। তবে শিক্ষার্থীদের কেউ পেয়েছে একটি, কেউবা পেয়েছে দুটি বই। এতেই খুশি তারা।
গতকাল বুধবার নতুন বছরের প্রথম দিনে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। ৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই বিতরণ করা হবে। আর ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মাধ্যমিকের সব বই বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
এ ছাড়া আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া মাধ্যমিকের কয়েকটি শ্রেণীর বই সরবরাহ করা হয়েছে চট্টগ্রামের স্কুলগুলোতে। মাধ্যমিকের দুই থানা শিক্ষা অফিসের আওতাধীন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সাতটি বই সরবরাহ করা হয়েছে স্কুলগুলোতে। বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম ৫ জানুয়ারি শুরু হবে। এরপর থেকে বিনামূল্যের পাঠ্যবই ধীরে ধীরে সরবরাহ করা হবে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি ও পাঁচলাইশ থানা শিক্ষা অফিসের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সাতটি বই পেয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান বলেন, প্রথমদিন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বই পেয়েছে। সব বই না পেলেও প্রথম দিনে একটি বই হলেও পেয়েছে। আশা করছি, ৫ জানুয়ারির মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া হবে।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, আমরা যে বইগুলো পেয়েছি সব পাঠিয়ে দিয়েছি। সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বই পায়নি। কেবল ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সাতটি করে বই পাবে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের সব শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে যাবে।
পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম জেলায় বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই পেয়ে খুশি শিশু শিক্ষার্থীরা।
গতকাল দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী ও কর্নফুলী উপজেলাসহ সমগ্র জেলার সরকারি, পরীক্ষণ, এনজিও, কেজি, উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন, আনরেজিস্ট্রার্ডসহ ৪ হাজার ৬৬টি বিদ্যালয়ের ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সিংহভাগ শিশু শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেলেন।
গতকাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আবদুর রহমান দৈনিক নয়াদিগন্তকে বলেন, বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছন। তিনি বলেন, প্রাক প্রাথমিকের বই চলে এসেছে এবং তা স্কুল পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়া শুরু হয়েছ্।ে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বই পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সব শিশু শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
নতুন বই না পেয়ে শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণœœ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় বছরের প্রথম দিনে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছেনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এনজিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবারকার বইয়ের চাহিদা প্রায় ১৩ লাখ। সেখানে বছরের প্রথম দিনে সাড়ে চার লাখ বই হাতে পেয়ে বিতরণ শুরু করেছে। গতকাল বুধবার সকালে শহরের হাউজিং এষ্টেট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান। সূত্রটি জানান, বাকি বইগুলো ছাপা শেষে বই পৌঁছলে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বইয়ের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪০ লাখ। সেখানে ৬ উপজেলায় বই পৌঁছেছে মাত্র ২০ হাজার, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সদর উপজেলোয় কোনো বই না পাওয়ায় গতকাল প্রথম দিনে কাউকে বই দেয়া হয়নি। সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামীম আহমেদ খান জানান, মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর বই পৌঁছেছে। আজ এই বইগুলো মাদ্রাসায় বিতরণ করা হবে বলে জানা যায়। কুষ্টিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল প্রকৌশলী রেজাউল হক জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বই এখনো আসেনি। তবে কবে আসবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু জানা যায়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা