অবশ্যই নির্বাচনী অপরাধীদের বিচার করতে হবে
- রাজশাহী ব্যুরো
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭, আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৭
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে, নির্বাচনে কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে বা কারচুপিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, যারা অন্যায় করেছে, নিরপেক্ষ বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি প্রদান করার প্রস্তাব এসেছে। আমি তো মনে করি এটা যৌক্তিক। কারণ অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে অন্যায় উৎসাহিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, ‘আমাদের সিস্টেমটা ভেঙে গেছে। এর পরিবর্তন করতে হবে। তা হলেই নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকর হবে। এ রকম অনেক প্রস্তাব মতবিনিময় সভায় এসেছে। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে, ভোটার তালিকায় প্রবাসীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে, তাহলে জনগণের মতামতের প্রতিফলন হবে। আমরা যে প্রস্তাবগুলো করব, সবগুলো না হলেও যতগুলো করা সম্ভব হয় হবে।’
সংস্কার কমিশন কত দিন কাজ করবে জানতে চাইলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের কাজ তিন মাস। অক্টোবরের ৩ তারিখে প্রজ্ঞাপনটা জারি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব ডিসেম্বরের মধ্যেই আমাদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরার। আমরা যে প্রস্তাবগুলো দেবো, সেগুলো কিছু বাস্তবায়ন করবে সরকার, কিছু নির্বাচন কমিশন, কিছু আপনারা (গণমাধ্যম) এবং সাধারণ মানুষ।’
ইভিএম প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এটা নিশ্চিত করেই বোধ হয় বলা যায়, নির্বাচন কমিশনও বলেছে। ইভিএম হবে না। কারণ এটা দুর্বল যন্ত্র। এটার মাধ্যমে কারচুপি সম্ভব। নির্বাচন ব্যবস্থায় কোনো যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। সেটা ছিল না। শুধু তা-ই নয়, ইভিএম কেনার ব্যাপারে কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির যিনি প্রধান ছিলেন, জামিলুর রেজা চৌধুরী তিনিও এটাতে দ্বিমত করেছিলেন। সেটা উপেক্ষা করে এসব কেনা হয়েছিল। এবার এটা হবে না, নিশ্চিত করেই বলতে চাই।’
এ পর্যন্ত কী ধরনের সংস্কার প্রস্তাব আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রস্তাব আসছে। সারা দিন লাগবে বলতে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করা; নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর ও ক্ষমতায়ন করা; রাষ্ট্রপতি নির্বাচন; রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন; নির্বাচনী অপরাধ; নারীর প্রতিনিধিত্ব; আচরণবিধি; গণমাধ্যমের আচরণবিধি এ সবগুলোই হলো আমাদের এখতিয়ারের অন্তর্ভুক্ত। এই নিয়েই আমরা আলোচনা করি, মতামত শুনি এবং এসব নিয়েই সুপারিশ করব।’
নির্বাচন কবে হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজটা কী? এই কমিশনের কাজ নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা না। আমাদের কাজ হলো নির্বাচন ব্যবস্থাটা ভেঙে গেছে, এ ব্যাপারে অংশীদারীর ভিত্তিতে কতগুলো সংস্কার প্রস্তাব করা। নির্বাচন কবে হতে পারে, এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।’ বলেন- বদিউল আলম মজুমদার।
এর আগে সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় মতামত গ্রহণ করেন বদিউল আলম মজুমদার। এ সময় সংস্কার কমিশনের সদস্য নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন সংস্কারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে একই ব্যক্তি যেন দুয়ের অধিক বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, অহেতুক নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে শব্দ দূষণ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ, সারা দেশে চারটি বা বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচনী অঞ্চল ঘোষণা করে ধাপে ধাপে নির্বাচনের আয়োজন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করা, প্রবাসীদের অনলাইনে ভোট প্রদানের সুযোগ দেয়া, নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা, না ভোট প্রদানের বিধান আবার ফিরিয়ে নিয়ে আনা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থীকে নির্বাচিত না করে প্রয়োজনে পুনরায় ভোট গ্রহণ, পোলিং এজেন্টদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসা এবং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ বাতিলসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা