নিরাপত্তা পাস নিয়ে এপিবিএন ও বেবিচকের টানাপড়েন
- আমিনুল ইসলাম
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পাস নিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএ) এবং বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মধ্যে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ৯ শতাধিক আর্মড পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তা পাস এখনো ইস্যু করেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বর্তমানে এপিবিএন সদস্যদের যে নিরাপত্তা পাস রয়েছে তার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে এপিবিএনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। অথচ বিমানবন্দরে কর্মরত অন্যান্য সংস্থা নিরাপত্তা পাসন পেলেও কেন এপিবিএনকে দেয়া হচ্ছে না তা নিয়ে বিমানবন্দর এপিবিএনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর সব পাস স্থগিতের সার্কুলার জারি করে বেবিচক। বেবিচকের সদস্য (সিকিউরিটি) এয়ার কমোডর মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান খানের স্বাক্ষরিত ওই সার্কুলারে বলা হয়, বেবিচকের এয়ারপোর্ট পাস নীতিমালা-২০২০ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর থেকে আগের ইস্যু করা পাসগুলো স্থগিত ঘোষণা করা হলো। এতে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রিত টার্মিনাল, এয়ারসাইটে প্রবেশ ও দায়িত্ব পালনের জন্য ৩০ নভেম্বর থেকে বৈধ এভসেক আইডি-সংবলিত পাস থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে এভসেক আইডি নিতে বলা হয়। নতুন এভসেক আইডি-সংবলিত পাস ছাড়া অন্য কোনো পাস নিয়ে বিমানবন্দরে কাউকে ঢুকতে দেয়া যাবে না। জানা যায়, এপিবিএন সদস্যদের জন্য পাসের ব্যাপারে লিখিত আকারে বলা হলেও এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তই জানায়নি বেবিচক। এ ছাড়া এয়ারসাইটে এপিবিএন সদস্যদের মোতায়েনের একটি পরিকল্পনা চাওয়া হয়। এপিবিএনের পক্ষ থেকে সেই পরিকল্পনা চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া হলেও সেটির মাস পেরুলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এপিবিএনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে সম্প্রতি বেবিচককে চিঠি দেয়া হয়। যেখানে বলা হয় ‘২০১০ সাল থেকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা দায়িত্বের পাশাপাশি ভিআইপি ও ভিভিআইপি প্রতিরক্ষা, ভিভিআইপি বিমান প্রতিরক্ষা, বিভিন্ন কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও পালন করে আসছে।
এপিবিএন জানায়, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ কারবারিদের আটক, ছিনতাইরত অবস্থায় ছিনতাইকারী চক্র এবং মানবপাচারকারী দুইজন চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যা প্রতিরোধকল্পে ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশের কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারি অতীব জরুরি। সে লক্ষ্যে গত ১১ নভেম্বর বেবিচক চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে তার অফিস কক্ষে সিভিল অ্যাভিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং এপিবিএনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আইজি এপিবিএন-সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের অভ্যন্তরে প্রতি শিফটে এপিবিএন ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। ইতোমধ্যে প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ ছাড়া সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এপিবিএন ফোর্স এবং অফিসারের দায়িত্ব পালনে টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের অভ্যন্তরে ও সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশের জন্য পাসের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত বিদ্যমান। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত অন্যান্য সংস্থার (কাস্টম, ইমিগ্রেশন, আনসার, বিমানবাহিনী, সিভিল স্টাফ, এসবি, এনএসআই, ডিজিএফআই) নতুন পাস ইস্যু করা হলেও এপিবিএন সদস্যদের নামে পাস ইস্যুর জন্য সিভিল অ্যাভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলেও সন্তোষজনক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। ফলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর বিমানবন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটা সঙ্কট তৈরি হতে পারে। এর আগেও এই দুই সংস্থার মধ্যে একটি টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। বেবিচক কর্মকর্তারা এপিবিএনের একটি অফিস দখলে নেয়। এই নিয়ে এপিবিএনের পক্ষ থেকে থানায় একটি জিডিও করা হয়েছিল।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম বলেন, এখনো নতুন পাস ইস্যু করা হয়নি। তবে কেন দিচ্ছে না সেটি জানা নেই। এটা একান্তই বেবিচক কর্তৃপক্ষের বিষয়। এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, এপিবিএনের নিরাপত্তা পাস আমরা প্রসেসে রেখেছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা