১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`

কোরিয়ান কোম্পানি ৬৯৩ কোটি টাকায় এক কার্গো এলএনজি দেবে বাংলাদেশকে

-


আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য আরো এক কার্গো লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। আন্তর্জাতিক কোটেশনে অংশ নিয়ে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এককের দাম ১৪.৬৯ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।এক কার্গো এলএনজি ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

সূত্র জানায়, আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে গত ৪ নভেম্বর জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয়, আগামী ২০২৫ সালের ১৬-১৭ জানুয়ারি ২০২৫ সময়ে ১(এক) কার্গো এলএনজি ক্রয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে । গত ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর কোটেশন আহ্বান করে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩ প্রতিষ্ঠানকে এলএসপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে চিঠি পাঠানো হয়। দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে দাখিলকৃত তিনটি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সংবলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের নিকট দাখিল করে। ৩টি কোটেশনের মধ্যে ৩টি কোটেশনই রেসপন্সিভ হয়। এর মধ্যে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১৪.৬৯ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সর্বনি¤œ দরদাতা হয়। অন্য ২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলেরায়েট এনার্জি ১৪.৮৪ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে দ্বিতীয় এবং সিঙ্গাপুরের পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল ১৪.৮৬ ডলার উল্লেখ করে তৃতীয় দরদাতা হয়।

রেসপন্সিভ ৩টি প্রতিষ্ঠানের দাখিলকৃত সব বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম সর্বনি¤œ প্রস্তাবিত একক দর ১৪.৬৯ মার্কিন ডলার বা এমএমবিটিইউ যা কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন দাখিল করেছে। ওই প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪ দশমিক ৬৯ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার মার্কিন ডলার (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)। ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর মুদ্রা বিনিময় হার ১ মার্কিন ডলার ১২০.০০ টাকা হিসেবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৯২ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার টাকা (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)। এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ২ শতাংশ এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭ শতাংশ ভ্যাট এবং এআইটি এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৯০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গত কয়েক বছর ধরে দুটি দেশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এর বাইরেও স্পট মার্কেট থেকে কোটেশনের মাধ্যমেও এলএনজি ক্রয় অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে দেশীয় উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপিত দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার থেকে ২.৫ এমটিবিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এবং ওমান থেকে ১.০ এমটিপিএ এলএনজি অর্থাৎ মোট ৩.৫ এমটিপিএ (৫৬ কাগো) এসএনজি ক্রয় করা হচ্ছে। এ ছাড়া, চাহিদার আলোকে বার্ষিক চাহিদা কর্মসূচি (এডিপি) এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি ক্রয় করা হয়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement