ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের রেলওয়ের দরপত্রে অংশগ্রহণের প্রতিবাদ
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬
ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের নানা কৌশলে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার আওয়াজ উঠেছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রেলওয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ক্রয় টেন্ডারে চিহ্নিত ব্যক্তিরা অংশ নিতে শুরু করেছে। ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলন এ ক্ষেত্রে বিশেষ কয়েক ঘটনার উল্লেখ করে সরকারের রেল মন্ত্রণালয়ে এক স্মারকলিপি দিয়েছে।
ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলনের স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের ঘৃণ্যতম বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা সময়ের দাবি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিলেটগামী উদয়ন ট্রেনে দু-তিন মাস আগে এস এ করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক বিভাগ হতে লাইসেন্স গ্রহণ করে নামকাওয়াস্তে সার্ভিস দেয়ার নামে মহিলা যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে যুক্ত হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এ অনৈতিক ও জঘন্য অপরাধ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তার লাইসেন্স অদ্যাবধি বলবৎ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামস্থ আই এইচ ফ্যাক্টরি রোডে রেলওয়ের বিশাল ভূসম্পত্তি ‘ট্রাক স্ট্যান্ডের’ নামে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে রেলভূমি ব্যবস্থাসংক্রান্ত নীতিমালাবহির্ভূতভাবে জি.এম/পূর্ব মহোদয়ের স্বাক্ষর জাল করে লাইসেন্সকৃত ভূমি হিসেবে প্রচার করে নিরীহ জন সাধারণ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ায় অনেক দোকানদারের পথে বসার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নতুন স্টেশন ভবনের লাগোয়া দক্ষিণ পাশে ওই মূল্যবান রেলভূমি ঢাকা-চট্টগ্রাম নতুন ম্যাগনেট ট্রেন চালু করার জন্য সরকারের পরিকল্পনাধীন সংরক্ষিত ভূমি হিসেবে চিহ্নিত। অন্যের অবৈধ দখলমুক্ত রাখা রেলওয়ের জন্য এখন বিশেষভাবে প্রয়োজন। এ বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া জনস্বার্থে অতীব জরুরি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিআরবি এলাকায় রেলওয়ে হাসপাতালের সংলগ্ন তাসফিয়া রেস্টুরেন্টটির লাইসেন্স ওয়েল ফেয়ার অফিস হতে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাবেক সরকারের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও নতুন লাইসেন্স প্রদান করা একান্ত জরুরি। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী (মহানগর ট্রেনে, সুবর্ণ, সোনার বাংলা, তুর্ণা নিশিতা ও সিলেটগামী ট্রেনে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস) ট্রেনে খেয়ালখুশিমতো পছন্দসই প্রতিষ্ঠান এ এস করপোরেশন ও শাহ আলমকে লাইসেন্স প্রদান করায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া অতীব জরুরি।
ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলন বলেছে, চট্টগ্রাম নতুন রেলস্টেশন ভবনের দোতলায় একতরফাভাবে বাণিজ্যিক বিভাগ হতে শাহ আলম ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীর নামে দু’টি আবাসিক হোটেলের লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিযোগিতা হয়নি। সরকারের মোটা অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতির কারণে এ লাইসেন্স বাতিল করা প্রয়োজন। আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এম এ হাশেম রাজু বলেছেন, এসব বিষয়ে অচিরেই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হবে।