১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১৬ বছর দিল্লি ছাড়া হাসিনাকে কোনো দেশ সমর্থন করেনি : রিজভী

ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশীয় পণ্য কিনতে রাজধানীর শান্তিনগরে বিএনপির প্রচারণা : নয়া দিগন্ত -


বিগত ১৬ বছর একমাত্র দিল্লি ছাড়া শেখ হাসিনাকে দুনিয়ার কোনো দেশ সমর্থন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবজ্ঞা করেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত অহঙ্কার করে নিজেদের প্রভু মনে করে। তা না হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৬ ডিসেম্বরের দিন বললেন ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয় তিনি তো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, বাংলাদেশের স্বাধীন ভূখণ্ডকে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের, ছোট করলেন অবজ্ঞা করলেন।
গতকাল সকালে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘যুদ্ধ করেছে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা লুঙ্গি কষে বেঁধে নদী, নালা, খাল বিল জঙ্গল থেকে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীদের প্রতিরোধ করেছেন। আপনারা (ভারত) বন্ধুর ভূমিকা পালন করেছেন তাহলে এটা বাংলাদেশের বিজয় দিবস না হয়ে ভারতের বিজয় দিবস হয় কী করে? তার মানে উনারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে অবজ্ঞা করতে চান। আমাদের যে ৩০ লাখ মানুষ অকাতরে জীবন দিলো সেটিকে তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে চান। আমেরিকা যখন যুদ্ধ করছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তখন ফ্রান্স আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল সেই ১৭৭৬ থেকে ১৭৮১ সাল তাদের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত। কই ফ্রান্স তো বলে না এটা তাদের বিজয় দিবস আমেরিকানরা পালন করে তাদের বিজয় দিবস তাদের স্বাধীনতা দিবস।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘গোটা বিশ্ববাসী জানে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা তাদের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিলো ওই জীবনের কি কোনো মূল্য নেই মোদি বাবু? আপনি বলছেন, এটা আপনাদের বিজয় দিবস এটা ভারতের বিজয় দিবস। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল এমএজি ওসমানী সাহেব একটি কথা বলেছিলেন, ভারত যদি আমাদের সহযোগিতা নাও করত তারপরও বাংলাদেশ স্বাধীন হতো। কারণ একজন তেজস্বী অদম্য সাহসী যখন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কোনো রাজনীতিবিদ নিতে পারেননি সেই সময়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে একজন তরুণ মেজর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যে তরঙ্গ তৈরি করেছিলেন সেই তরঙ্গে অন্য সেনা অফিসাররা বাংলাদেশের মানুষ উদ্বুদ্ধ হন এবং তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আজকে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, মতিউর রহমান, হামিদুর রহমান এই যে বীরশ্রেষ্ঠ তারা কিসের জন্য জীবন দিয়েছে? ওরা কি ভারতের বিজয়ের জন্য জীবন দিয়েছে? নাকি তাদের নিজের দেশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছে।

দিল্লির নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘যুদ্ধ করে আমরা যে স্বাধীন দেশ পেয়েছি তারা (ভারত) মনে করে চিরদিন আমরা তাদের গোলাম হয়ে থাকব, অনুগত হয়ে থাকব। আমি দিল্লির নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে বলতে চাই আপনারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করেন তাহলে ভারত থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার কেন? শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে এই মনোকষ্টে আপনারা অসংখ্য মিডিয়ায় প্রতিদিন বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য রাখছেন আপনাদের এত প্রেম কেন শেখ হাসিনার বিষয়ে? এটারও কারণ আছে। কারণ ভারতের বিএসএফ দুই দিন-তিন দিন পরপর আমাদের সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করে একমাত্র শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এটার প্রতিবাদ করে। দিল্লির সিংহাসনে যারা আছেন তারা বলেন, আমরা অন্যায় করি বাংলাদেশীদের হত্যা করি শেখ হাসিনা তো টুঁ শব্দ করে না এইরকম প্রধানমন্ত্রীই তো আমাদের দরকার। সেই কারণে শেখ হাসিনা নির্বাচিত হোক না হোক ও যত বড়ই ফ্যাসিস্ট হোক শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় রাখতে হবে। বিগত ১৬ বছর একমাত্র দিল্লি ছাড়া শেখ হাসিনাকে দুনিয়ার কোনো দেশ সমর্থন করেনি। এই কারণেই আজকে তাদের মনে খুব ব্যথা। তাই প্রতিদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। আমরা ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে চাই না। বাংলাদেশে একটি পরিবর্তন হয়েছে এই পরিবর্তন ১৬-১৭ বছরের নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে।

ভারতের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা সমস্ত শিষ্টাচার, সমস্ত রাষ্ট্রাচার, সমস্ত কূটনীতিকে উপেক্ষা করে আপনাদের পররাষ্ট্র দফতর আপনাদের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা প্রতিদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা, মিথ্যা কথা অপপ্রচার অপতথ্য দিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। কিন্তু সারা দুনিয়ার মানুষ জানে বাংলাদেশ কত সম্প্রীতির দেশ, কত শান্তির দেশ। যারা আমাদের ঘৃণা করে যারা আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তাদের বলে রাখি এই বিষোদগার যত দিন করবেন আমাদের প্রতিবাদ এবং আমাদের যে রাজনৈতিক প্রতিরোধ আমরা করে যাব।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা ডা: তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ

 


আরো সংবাদ



premium cement
টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠ-সংলগ্ন অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য নয়, এটি পুরোনো ভিডিও অবকাশকালীন চেম্বার জজ বিচারপতি রেজাউল হক ইজতেমা ময়দান এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-বেনাপোল রুটে ট্রেন চলাচল শুরু ২৪ ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবে শহীদ-আহতদের সন্তানের শিক্ষার ব্যবস্থা করবে জামায়াতে ইসলামী : বুলবুল বগুড়া সদরের সাবেক এমপি রিপু গ্রেফতার আন্তঃমহাদেশীয় শিরোপা জিতল রিয়াল পেকুয়ায় ডাম্পট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৫ ভিয়েতনামে বিনোদন কেন্দ্রে আগুন, মৃত্যু ১১ গুমের সাথে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা, নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র গুমে জড়িত ২০ সেনা-র‌্যাব-পুলিশ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সকল