১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বায়রার ওয়েবসাইটে এখনো পলাতক প্রতিমন্ত্রীর ছবি

-

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) নিজস্ব ওয়েবসাইটে এখনো পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের ছবি ভাসছে। সেই সাথে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশারের ছবিও রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই বায়রা সভাপতি ইস্কাটনের অফিসে যাচ্ছেন না। তিনি পলাতক আছেন বলে কমিটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার বায়রার ওয়েবসাইটের ছবির স্ক্রিনে কয়েকটি ছবির মধ্যে একটিতে দেখা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সিলেট এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান। তিনি এই পদ পাওয়ার পর বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা তাকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। বায়রার তৎকালীন সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশারের নেতৃত্বে ফুল দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম, সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন প্রমুখ।

গত ৫ আগস্ট দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা থেকে শুরু করে অনেক প্রভাবশালী নেতাকর্মী গাঢাকা দেন। অনেকে আবার অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে ‘উপরের’ ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ‘নিরাপদে’ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। এর মধ্যে প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানও নিরাপদে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন বলে এখন পর্যন্ত জনশ্রুতি রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে তৎকালীন সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব সরকারি-বেসরকারি দফতর, এমনকি রাস্তাঘাট থেকেও তাদের সবার ছবি অপসারণ করা হয়। কিন্তু সাড়ে তিন মাস পরও এখনো জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার নিজস্ব ওয়েবসাইটে পলাতক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর ছবি ভাসতে দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে বায়রার সাধারণ সদস্যদের কেউ কেউ ক্ষোভ জানালেও ওই সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ছবি সরানো হচ্ছে না। তাদের প্রশ্ন এখনো আওয়ামী দোসরদের ছবি কিভাবে বায়রার ওয়েবসাইটে থাকে?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণের সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে লন্ডনে তার একটি বিশাল মার্কেটও রয়েছে। বস্তায় বস্তায় টাকা বিনিয়োগ করে তিনি প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন। এসব টাকা কালেকশনের জন্য নিজের ভাতিজাকে এনে পাশের রুমে বসিয়েছিলেন। তার মাধ্যমেই নিয়োগানুমতি, বিদেশগামীদের বহির্গমন ছাড়পত্রসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে টাকা আয়ের মেশিন চালু করা হয়েছিল। আর তার দোসর হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে তখন যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘুষবাণিজ্য সক্রিয় ছিলেন। তারা এখনো বহাল থেকে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে তার মনোনীত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাই অনেক। একইভাবে মোহাম্মদ আবুল বাশার বায়রার সভাপতির পদে বসে সিন্ডিকেট বাণিজ্য করে শত শত কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিরাপদে দেশ ছেড়ে সিঙ্গাপুরে আছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার হয়ে বায়রায় কয়েকজন নেতা এখনো আগের মতোই কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বায়রার সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।


আরো সংবাদ



premium cement