সরকারের সমালোচনা মানে ব্যর্থ করার চেষ্টা নয় : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে চেষ্টা করছে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা বিচার বিভাগ, দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কথাবার্তা এবং আচরণ কেন হাসিনার মতো হবে! আপনারা অগ্রযাত্রাকে সহযোগিতা করবেন। সরকারের সমালোচনা মানে ব্যর্থ করার চেষ্টা নয়, এটিই গণতন্ত্রের রীতি।
গতকাল দুপুরে যাত্রাবাড়ীর ভাঙ্গাপ্রেসের নবী টাওয়ারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোর মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ড. ইউনুসের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে যদি বলি তার মতো সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি দেশের গণতন্ত্রকে যখন আওয়ামী লীগ কুক্ষিগত করে রেখেছিল, খালেদা জিয়া যখন অত্যাচারিত হয়েছে, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশান্তরি করে রাখা হলো, বিনাদোষে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ করা হলো, গুম-খুনে মেতে উঠেছিল তখন তো ড. ইউনূস একটি বিবৃতি জানিয়ে নিন্দা জানাননি। অথচ আপনার (ড. ইউনূস) প্রতি যখন অন্যায় হয়েছে বিএনপি কিন্তু ঠিকই প্রতিবাদ করেছে। ইউনূস সাহেব সর্বনন্দিত একজন ব্যক্তি। ক্ষুধা বিমোচন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে যে ভূমিকা রেখেছেন তা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। তবে জাতিকে যখন আওয়ামী লীগ দাসে পরিণত করেছিল তখন জাতি প্রত্যাশা করেছিল ড. ইউনূস প্রতিবাদ জানাবেন, বিবৃতি দিবেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা এমন একটি দেশে বাস করছি যেখানে বাস করতে হলে পার্শ্ববর্তী দেশের অনুমতি নিয়ে বসবাস করতে হবে এবং তারা যাকে ক্ষমতায় আনতে চায় তাকেই মানতে হবে। ওই সরকার যেভাবে এ দেশ চালাবে সেভাবেই চলতে হবে। তাহলে পাকযুদ্ধ কেন হয়েছিল? পাকিস্তান ও তাদের মধ্যে তো কোনো পার্থক্য দেখছি না।
তিনি বলেন, আজকে পতিত স্বৈরশাসকের জন্য ভারত মায়াকান্না করছে। দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। এই যাত্রাবাড়ীতে তো শত শত মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এখানেই তো অনেক মন্দির আছে সেখানে কোনো হামলা হয়েছে, কোনো হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে? এসব ধূম্রজাল সৃষ্টি করে তারা গণধিকৃত আওয়ামী লীগকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়।
তিনি আরো বলেন, এই যাত্রাবাড়ীতে অসংখ্য মা তার সন্তান হারিয়েছে, স্ত্রী বিধবা হয়েছে, সন্তান এতিম হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর এই বিপ্লব জেলে থেকে আমাদের আত্ম বিহ্বল করেছে। চার আগস্টও আমি রিমান্ডে ছিলাম। তখনো শুনলাম গণতন্ত্রের দাবিতে যাত্রাবাড়ী জ্বলছে। এখানে মাসুম বাচ্চারাও ঘরে বসে থাকেনি। তারা তো রাজনীতি বুঝে না। শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেøাগান দেয়ার অপরাধে এই মাসুম বাচ্চাদেরও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই আত্মত্যাগ পৃথিবীতে খুবই বিরল। এই যাত্রাবাড়ীতে ঘরে ঘরে জাতীয়তাবাদী শক্তি। এই শক্তি সব অত্যাচার-অবিচার থেকে বের হতে সক্ষম।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনে এখনো পতিত আওয়ামী স্বৈরশাসকের দোসর বিদ্যমান। তাই হত্যা মামলা নিয়ে গরিমসি করছেন। হত্যাকারীদের আটকের জন্য পুলিশ কঠিন হচ্ছে না। তাই পুলিশের নামে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ঢাকা ৫ আসনের সমন্বয়কারী নবী উল্লাহ নবীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল ইসলাম, মকবুল হোসেন টিপুসহ যাত্রাবাড়ীতে শহীদ পরিবারের পরিবারবর্গ।
সভাপতির বক্তব্যে নবী উল্লাহ নবী বলেন, হায়েনা সরকারের দলীয় ক্যাডার এবং পুলিশ বাহিনী যেভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তার বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে। যারা এই সরকারের দোসর ছিলেন, লুটেরা ও খুনিদের ইন্ধন দিয়েছেন তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা