‘বিজেপি, আরএসএস মসজিদে ঘৃণা ছড়াচ্ছে’ : আসাদউদ্দিন ওয়াইসি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭
ভারতের অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, জওহরলাল নেহরুর পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রীরা রাজস্থানের আজমির শরীফ দরগাহ ‘চাদর’ পাঠিয়েছেন। দরগাহ গত ৮০০ বছর ধরে সেখানে রয়েছে। তখন মুঘলদের রাজত্ব ছিল। সম্রাট আকবর সেখানে অনেক কিছু স্থাপন করেছিলেন। তারপর মারাঠারা শাসন করতে আসে, আজমির ১৮ হাজার টাকায় ব্রিটিশদের কাছে বিক্রি হয়। রানি এলিজাবেথ যখন ১৯১১ সালে পরিদর্শন করেন, তারা সেখানে একটি জলঘর নির্মাণ করেন। নেহরু থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীরা দরগায় ‘চাদর’ পাঠাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদিও সেখানে ‘চাদর’ পাঠান। কেন বিজেপি-আরএসএস মসজিদ ও দরগা নিয়ে এখন এই বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে? ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দি প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রাজস্থানের একটি আদালত আজমির শরীফ দরগাকে ভগবান শিবের মন্দির বলে দাবি করে হিন্দু সেনার একটি আবেদন গ্রহণ করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি আজমির শরীফ দরগার ইতিহাস তুলে ধরে এএনআই’এর কাছে এসব কথা বলেন। এআইএমআইএম এমপি ওয়াইসি নি¤œ আদালতের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, মসজিদ নিয়ে আইন উপেক্ষা করা হচ্ছে। নিম্ন আদালত কেন উপাসনালয় আইনের শুনানি করছে না?
ওয়াইসি বলেন, ‘তারা সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে একটি পক্ষ বানিয়েছে। তাদের কী বলবে মোদি সরকার? নিম্ন আদালত কেন পূজার স্থান নিয়ে আইনের শুনানি করছে না? আপনি সব জায়গায় গিয়ে বলবেন যে মসজিদ বা দরগার জায়গায় অন্য কিছু ছিল। এভাবে চলতে থাকলে একজন মুসলমানও কোথাও গেলে বলা হবে যে এটি এখানে ছিল না। এ কোথায় থামবে? আইনের শাসনের কী হবে? গণতন্ত্র কোথায় যাবে?
ওয়াইসি বলেন, মোদি এবং আরএসএসের শাসন দেশের ভ্রাতৃত্ব এবং আইনের শাসনকে দুর্বল করে তুলছে, তাদের এর জন্য জবাব দিতে হবে। আমরা সামভালে দেখেছি যে পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছে। এসব বিজেপি-আরএসএস-এর নির্দেশে করা হচ্ছে।
কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ এর আগে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আজমির শরিফ দরগাহ সম্পর্কিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত এবং সুপ্রিম কোর্টকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। তিনি কেন্দ্র সরকারকে উপাসনার স্থান আইনকে পাস কাটিয়ে চলার বিষয়ের অভিযুক্ত করেছেন এবং এ ধরনের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, এ ধরনের বিষয়গুলো পুরো ভারতকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
ইমরান মাসুদ বলেন, আপনি সম্পূর্ণ মুসলিম সম্প্রদায়কে সাইডলাইন করতে চান? আপনি তাদের ধর্মীয় স্থান এবং সম্পত্তি ছেড়ে যাচ্ছেন না। আপনি কোথায় আমাদের পাশে রাখতে চান? আমরা কোথায় যাব? আমাদের ভারত থেকে নির্বাসিত করুন। কোন মসজিদের নিচে মন্দির খুঁজবেন? কোন সীমা আছে কি না? তারা (ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার) উপাসনা আইন ১৯৯১ সরিয়ে রেখেছে। তারা (বিজেপি) তাদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য পুরো ভারতকে কি পুড়িয়ে দেবে? জব আগ লাগতি হ্যায় তো সবকে ঘর লাগতি হ্যায় (আগুন যখন জ্বলে, তখন সর্বত্র জ্বলে ওঠে)।
অল ইন্ডিয়া সুফি সাজ্জাদানশিন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সৈয়দ নাসেরউদ্দিন চিশতি বলেন, আজমির দরগার ভিতরে একটি শিব মন্দির আছে দাবি করে দেয়া পিটিশনের জবাবে রাজস্থানের আজমির আদালত দরগাহ কমিটি, ভারতীয় প্রতœতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) এবং সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ তিন পক্ষকে নোটিশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছে। আমি খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর বংশধর, কিন্তু আমাকে এতে পক্ষভুক্ত করা হয়নি। আমরা আমাদের আইনি দলের সাথে যোগাযোগ রাখছি। ভারতে এসব ঘটনা বাড়ছে। প্রতি দ্বিতীয় দিনে আমরা মসজিদ ও দরগাহ দাবি করে দলগুলোকে দেখি। এটা আমাদের সমাজ ও দেশের স্বার্থে নয়। আজ ভারত বিশ্ব শক্তি হয়ে উঠছে....কবে পর্যন্ত আমরা মন্দির-মসজিদ বিতর্কে আটকে থাকব?
চিশতি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি আইন করা উচিত এবং নির্দেশিকা জারি করা উচিত যাতে কেউ এই জাতীয় ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে বিতর্কে ফেলতে এমন দাবি না করে। আজমিরের ৮৫০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। আমি ভারত সরকারের কাছে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা