মহেশখালী দ্বীপের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পর্যটকরা
- মুহাম্মদ তারেক মহেশখালী (কক্সবাজার)
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৩
কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে মহেশখালীর পান না খেলে কি চলে! মহেশখালী নৈসর্গিক সৌন্দর্যঘেরা একটি দ্বীপ। সুউচ্চ পাহাড় আর সবুজের সমারোহে বাংলাদেশের এক মাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী। পাহাড় ছেদ করে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা মেঠো পথের মনোরম দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। পাহাড়ের উঁচু নিচু ঢাল যেন সবুজ গালিচায় ঢেকে দেয়া হয়েছে। অপূর্ব এই দৃশ্যে যে কারোর চোখ আটকে যাবে। পাহাড় আর সাগরের মিতালি যেন এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণের মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের কাছে। তবে দ্বীপ উপজেলাটি কক্সবাজারের ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দূর-দূরান্তের পর্যটকদের কাছে এখনো পরিচিত লাভ করতে পারেনি। দিন দিন পর্যটক বাড়ছে আগমন দেশী-বিদেশী পর্যটকের সমাহার ঘটছে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে হোটেল-মোটেল জোন গড়ে উঠলে এই পাহাড়ি দ্বীপটি হয়ে উঠতে পারে কক্সবাজারের মতো আকর্ষণীয় পর্যটক স্পট। কক্সবাজার থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্ব। দ্বীপটি আয়তনে ৩৬২ বর্গকিলোমিটার। মহেশখালী দ্বীপের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আদিনাথ পাহাড়, সোনাদিয়া, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা নামে তিনটি ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে। পান, মাছ, শুঁটকি, চিংড়ি, লবণ ও মুক্তার উৎপাদনে এই উপজেলার সুনাম রয়েছে। চার-পাঁচ ঘণ্টায় কক্সবাজার থেকে মহেশখালী দ্বীপ থেকে ঘুরে আসা যায়। কক্সবাজার শহরের যেকোনো জায়গা থেকে মহেশখালী যাওয়ার জন্য ছয় নম্বর জেটি ঘাটে যেতে হবে। তারপর স্থানীয় ট্রলার বা স্পিডবোটে ১০০-১১০ টাকা ভাড়ায় মহেশখালীতে যেতে হবে। চাইলে স্পিডবোট রিজার্ভ নিতে পারবেন। জেটিঘাট থেকে স্পিডবোটে ৩০ মিনিটের মতো লাগে মহেশেখালী যেতে। স্পিডবোটে চড়ে বাঁকখালী চ্যানেল পার হওয়ার সময়টা দারুণ। সকালবেলা দূরে রোদ আর নদীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। সুবিশাল পাহাড় আর অপরূপ দৃশ্যের এই দ্বীপ।
স্পিডবোট থেকে নেমে মহেশখালী জেটিঘাট থেকে ব্যাটারচালিত টমটম বা ইজিবাইকে যেতে হবে মহেশখালীর প্রধান আকর্ষণ প্রাকৃতিক লিলা ভূমি আদিনাথ মন্দির। এখানে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি বৌদ্ধবিহার রয়েছে। বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির আর বৌদ্ধবিহার ঘুরে দেখে আপনার মন প্রশান্তিতে ভরে যাবে। আদিনাথ মন্দিরটি ৮৫.৩ মিটার উঁচু মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। পাহাড়ের ঢাল কেটে বানানো ৬৯টি সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয় মন্দিরে। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে এই মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা জানা যায়। মন্দিরটির গোড়াপত্তনের ইতিহাস অনেক চমকপ্রদ। এ ছাড়া প্রতি বছরে ফাগুন মাসে এখানে আদিনাথ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি পথেই দেখতে পাবেন মহেশখালীর বিখ্যাত পানের বরজ আর লবণের মাঠ। মহেশখালীর সবচেয়ে চমৎকার দিক হলো আদিনাথ পাহাড়ের সাথে সাগরের মিতালী দৃষ্টি নন্দন বাইন গাছ অপরূপ সৌর্ন্দয এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দ্বীপ। আদিনাথ মন্দিরে ওঠার সিঁড়ির ধারেই চোখে পড়বে সাগরের অপরূপ সৌর্ন্দয এবং নানা ধরনের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় রাখাইনরা। বিভিন্ন রকমের তৈরি চাদর, পাঞ্জাবি, মাফলারসহ নানারকম পোশাকে সাজানো সব দোকান। পর্যটকদের ভিড়ও প্রচুর দোকানগুলোতে। এখানকার প্রায় সবকিছুই স্থানীয়দের তৈরি। স্থানীয় রাখাইনরা তাদের নিজস্ব ধারার পোশাক তৈরি করে থাকেন।
মহেশখালীর প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ মহেশখালী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শামীম ইকবাল বলেন মহেশখালী দ্বীপে পর্যটক স্পর্টের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। মহেশখালী লবণ, শুঁটকি, পান খুবই দেশে বিদেশে খুবই জনপ্রিয়, দেশের অর্থনীতিতে এগুলোর ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে মহেশখালীর আদীনাথ, সোনাদিয়াসহ পর্যটক আকৃষ্ট স্থানগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন করে আরো আধুনিকায়ন করার জন্য। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, মহেশখালীতে প্রতিদিন প্রচুরসংখ্যক পর্যটন ভ্রমণ করেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। নিরাপদ ভ্রমণ এবং যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা