ভারতের পক্ষ থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১১
ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘চট্টগ্রামে গতকাল একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা একটি সংগঠনের অভ্যুদয় দেখছি খুব অল্প কিছুদিন ধরে। এই সংগঠনটি কিভাবে তৈরি করা হলো কে কে এর নেতৃত্বে আছে? গতকাল কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সেজে এই এই সংগঠনটির মধ্যে ঢুকে সারা দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের একজন নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এই কারণে ভারত থেকে তার মুক্তির দাবি করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র দফতর থেকে মুক্তি দাবি করা হয়েছে। এগুলো কিসের আলামত?
গতকাল দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গুলিতে মিরপুরে শহীদ পরিবারগুলোর সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমাদের প্রায় দুই হাজারের মতো বাচ্চা ছেলেসহ সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে- কই তখন তো ভারতের পররাষ্ট্র দফতর একটা স্টেটমেন্ট দেয়নি। শেখ হাসিনার এই ভয়ঙ্কর নিপীড়নের জন্য একটা স্টেটমেন্ট তো দেয়নি। আজকে যখন সরকার এবং সব মানুষ বুঝতে পারছে কোনো একটা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের খেলা চলছে, কোনো কিছু একটা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এটাতো একটি সূর্যের আলোর মতো একেবারে পরিষ্কার। এই সঙ্কটটা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। হঠাৎ বিভাগীয় শহরগুলোতে নেমে পড়ছেন, দাবি জানাচ্ছেন কই শেখ হাসিনার সময় তো দাবি জানাননি।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ষড়যন্ত্র এখনো থামছে না, ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ঠিকই কিন্তু তার যে টাকার উৎস এটা এখনো তৃণমূলে অনেকের কাছে নানাভাবে রয়েছে ওই টাকাগুলোই খরচ করে তারা এলাকার পর এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।
রিজভী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান পাশাপাশি শান্তিতে সবস্থানে দীর্ঘ দিন বাস করছি আজকে কেন পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে এখানে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়? বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরাট অংশ তারাও বুঝতে পারছে কোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে। কিন্তু তারা একজন আইনজীবীকে পর্যন্ত হত্যা করার মতো ধৃৃষ্টতা দেখাচ্ছে এর জন্য ভারতের পরাষ্ট্র দফতর কোনো বিবৃতি দিলো না, বিবৃতি দিলো, অস্থিতিশীলতা তৈরি করার কারণে চিন্ময় নামে একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার জন্য। সে তো বাংলাদেশের নাগরিক তার প্রতি যদি সরকার অন্যায় করে তাহলে বাংলাদেশের সরকারের কাছে তাদের লোকজনসহ তারা সেখানে দাবি তুলতে পারেন। তাদের দাবি এখান থেকে হবে, কেন বাইরের একটি দেশ থেকে এই ধরনের প্রতিবাদ আসছে। এগুলো তো সব রহস্যজনক বিষয়। বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে তারা মনে হয় বিশ্বাস করতে চায় না। তারা মনে করে দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে যেভাবে নির্দেশ দেয়া হবে বাংলাদেশ সেভাবে চলবে। এটা ১৮ কোটি মানুষের দেশ, এই দেশ এভাবে চলতে পারে না। পাশের দেশের পলিসি মেকাররা এটা যেন ভুলে না যায়।
পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ভারত শাসন করছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ভারতের অনেক ছাত্রসংগঠন সমর্থন দিয়েছে, সহানুভূতি দেখিয়েছে; কিন্তু ভারতের এই শাসকগোষ্ঠী তা দেয়নি। এই কারণেই তারা একচোখা নীতি অবলম্বন করে বাংলাদেশকে দেখছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র উত্তরণের যে প্রক্রিয়া চলছে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যে দেশ যাচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে এইটাকে অনেকেই সহ্য করতে পারছে না। এই ধরনের পরিকল্পিত মাস্টার প্ল্যান বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত রাজনৈতিক সচেতন সংগ্রামী এবং নিজের জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনতা রক্ষা করতে জানে, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে জানে এবং গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে জানে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফউদ্দিন বকুল, সংগঠনের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা