স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক : ধর্ম উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা যদি ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলো লালন করতে না পারি তাহলে আগামী দিনে এদেশে ইসলামী শিক্ষার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাঁচ হাজার ইবতেদায়ী মাদরাসাকে এমপিওভুক্তকরণের ঘোষণা দিলেও নানা কারণে সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ফোরামের দাবির সাথে সহমত পোষণ করেন।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, এদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রয়েছে। কিন্তু ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এটা বৈষম্য। এ বৈষম্য নিরসন করা প্রয়োজন।
ড. খালিদ বলেন, ইবতেদায়ী মাদরাসা ধর্ম মন্ত্রণালয়াধীন নয়, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। তিনি ফোরামের নেতৃবৃন্দকে তাদের দাবির বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া উপদেষ্টা তার পক্ষ হতে সম্ভাব্য সকল ধরনের সহযোগিতা করার বিষয়ে ফোরামের নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।
ড. খালিদ আরো বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক মুসলমান। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও রয়েছে। ধর্মচর্চা, ধর্মপালন ও ধর্মপ্রচার সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার।
তিনি বলেন, এদেশের পাঠ্যক্রমে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ঈমান, আকিদা, কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটা না হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্ম শিখবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ঠিক একইভাবে মুসলমানদেরকে তাদের কুরআন, সুন্নাহ, ঈমান, আকিদা সম্পর্কে শিক্ষা লাভের অধিকার থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, অতীতে এদেশে বারবার ইসলামী শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করার চক্রান্ত করা হয়েছে। এ চক্রান্ত আগামীতে চলবে না। এতে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ মাসউদুর রহমান তালুকদার। এতে ফোরামের পক্ষ হতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোকে জাতীয়করণসহ সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুবের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেসিনের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল মোমেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খান ও সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া।
হাটহাজারী মাদরাসার বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীন কওমী মাদরাসা আল-জামিয়াতুল আহ্লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনের সমাপনী দিনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, নির্বাচনের রেলগাড়ি চলতে শুরু করেছে, গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশি দেরি লাগবে না। নির্বাচনে ট্রেন লাইনের ওপর তুলে দিয়েছি। মনে রাখবেন আল্লাহ না করুক এ সরকার যদি কোনো কারণে ব্যর্থ হয় জাতির উপরে এ দেশের ওপর কালো অঁাঁধার নেমে আসবে। সরকারপ্রধান হাটহাজারীর উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের দাবিদাওয়া পূরণ হতে বেশি সময় লাগবে না।
গত শুক্রবার রাতে মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন আমাদের হাতে সময় কম, নির্বাচন কমিশনার গঠন করেছি। এরপর ভোটার লিস্ট হালনাগাদ করব।
মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দস্তারবন্দী সম্মেলনে নসিহত পেশ করেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা শেখ আহমদ, আল্লামা মুফতি আহমাদুল্লাহ, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, মাওলানা আবু তাহের নদভি, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা লোকমান হাকিম, মাওলানা ওসমান ফয়জী, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা সা’দাত হোসাইন সাহেব, মাওলানা মুফতি নুরুল্লাহ সাহেব, মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, আল্লামা আহমাদুল্লাহ প্রমুখ।
এ ছাড়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সিটি মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন, বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মির হেলাল উদ্দিন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা