২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
হেলথ টিপস

মাংসপেশির ব্যথায় করণীয়

-

বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের শারীরিক-মানসিক শক্তি ও দেহ কোষের কর্মক্ষমতা বা সামর্থ্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে। টিস্যুর এ সামর্থ্য ক্রমাবনতির হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুপাতে হয়। একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ যেমন কর্মক্ষম থাকতে পারেন, তেমনি আবার ২০-৩০ বছর বয়সের ব্যক্তিও ভুগতে পারেন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা ও জয়েন্ট বা মাংসপেশির ব্যথায়- যাকে আমরা সহজ ভাষায় বাত বলে জানি। সাধারণত মহিলাদের ৪০ বছর পর পুরুষদের ৫০ বছর পর বয়সজনিত জয়েন্টের সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের দেশের ৫০ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগ লোক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যেসব জয়েন্ট শরীরের ওজন বহন করে এবং অতিরিক্ত ব্যবহৃত হয় যেমন- ঘাড়, কোমর, স্কন্ধ বা সোল্ডার জয়েন্ট এবং হাঁটু ব্যথার রোগী সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। বাতের ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে ৯০ ভাগ হচ্ছে মেকানিক্যাল সমস্যা। মেকানিক্যাল সমস্যা বলতে মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তনকে বুঝায়। অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত হাড় ও জোড়ার ক্ষয় বা বৃদ্ধি, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস বা গেটেবাত, অস্টিওআথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলোসিস, বার্সাইটিস, টেন্ডিনাইটিস, স্নায়ুবিক রোগ, টিউমার, ক্যান্সার, মাংস পেশির রোগ, শরীরে ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, শরীরের অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি।

ভিটামিন ডি’র অভাবে শরীরের ব্যথা বেদনা বেড়ে যেতে পারে। শীতে এসব ব্যথা আরো বেড়ে যায় এবং রোগী অসুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে। এতে ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক, নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়। মানুষের রোগের ভেতর ব্যথা বা যন্ত্রণা একটি অস্বস্তি ও কষ্টকর সমস্যা। সাধারণত দুই বা দুইয়ের অধিক হাড় বা তরুণাস্থি শরীরের কোনো এক জায়গায় সংযোগ স্থাপনকারী টিস্যুর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটি অস্থি সন্ধি বা জয়েন্ট তৈরি করে। আর এ সংযোগ স্থাপনকারী টিস্যুগুলো হচ্ছে মাংসপেশি, টেন্ডন, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল, ডিস্ক, সাইনোভিয়াল পর্দা বা মেমব্রেন ইত্যাদি। এগুলো জয়েন্টকে শক্তি ও দৃঢ়তা প্রদান করে, জয়েন্টের তল বা সারফেসগুলোকে মসৃণ বা পিচ্ছিল রাখে। এ ছাড়া মেরুদণ্ডের দুটি হাড়ের মাঝে অবস্থিত ডিস্ক শক এবজরবার হিসেবে কাজ করে হাড়কে ক্ষয়ে যাওয়া থেকে রোধ করে। এসব অস্থি বা জয়েন্টে প্রধানত বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্ষয়, বৃদ্ধ বয়সে প্রদাহজনিত এবং অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের কারণে ব্যথা বেদনা সৃষ্টি করে কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটায়।

করণীয় : ১. অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় বাইরে বের না হয়ে বাসায় হাঁটা চলাফেরা ও ব্যায়াম করতে হবে। ২. হাইড্রেশনের অভাবে ব্যথা বাড়তে পারে তাই দৈনিক পরিমিত পরিমাণ পানি খেতে হবে। ৩. শরীর যাতে অতিরিক্ত তাপ না হারায় তা খেয়াল রাখতে হবে। ৪. বাসায় ২-৩ বেলা হট ওয়াটার ব্যাগ বা হিটিং প্যাড দিয়ে গরম সেঁক খুবই উপকারে আসবে। ৫. শীতে বাসায় রুম হিটের ব্যবহার করা যেতে পারে। ৬. নিয়মিত কুসুম গরম পানিতে গোসল, স্টিমবাথ খুবই উপকারী। তবে মাথায় গরম পানি ঢালা যাবে না। ৭. কাজকর্ম-শোয়া-বসায় দেহের সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে। ৮. বাসায় নরম সোলের জুতা ব্যবহার করতে হবে।
৯. ফলমূল, শাকসবজি নিয়মিত খেতে হবে। তবে যাদের গাউট জাতীয় বাত আছে তারা প্রয়োজনে লাল মাংস ডালজাতীয় খাবার, মিষ্টি, ঘি, চর্বি, সামুদ্রিক মাছ, পুঁইশাক কম খাবেন। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement