আন্দোলনে একাই ২৮টি গুলি ছোঁড়েন যুবলীগ কর্মী ফরিদ
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি ছোড়া তৌহিদুল ইসলাম ফরিদ (৩২) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে একাই ছাত্র-জনতার ওপর ২৮টি গুলি ছুড়েছেন ফরিদ।
শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা সদরের কমলনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ। ফরিদ চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং শমশেরপাড়া বড় পুকুরপাড় এলাকার সেকান্দর আলীর ছেলে।
পুলিশ বলছে, সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছেন ফরিদ। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নগরের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যাসহ ১২টি মামলা রয়েছে।
নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সাতক্ষীরা থেকে ফরিদকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্র-জনতার ওপর একাই ২৮টি গুলি ছুড়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদুল ইসলাম ফরিদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গত ১৮ জুলাই নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে একাই ২৮টি গুলি ছুড়েছি। এসব গুলি ছোড়ার জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মহিউদ্দিন ভাই আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। টাকা পেয়ে তার কথামতো গুলিগুলো ছুড়েছিলাম। মহিউদ্দিন চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হকের বন্ধু।’
উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, ‘তার এসব তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করছি। সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে যাদের নাম এসেছে, অবশ্যই তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি, ফরিদ পেশাদার সন্ত্রাসী। ভাড়াটে হিসেবে কাজ করেন। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যাসহ মোট ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ছাত্র-জনতার ওপর যে পিস্তল দিয়ে গুলি করেছেন, সেটি পাকিস্তানে তৈরি শুটারগান। অস্ত্রটি উদ্ধারে অভিযান চলছে। তার আরো কয়েকজন সহযোগী আছেন। তার এবং সহযোগীদের কাছে আরো অস্ত্র রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এসব সহযোগী এবং অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৭ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রামে গুলিতে নিহত হন ১০ জন। আহত হন শতাধিক। এসব ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্বজনরা নগরের বিভিন্ন থানা ও আদালতে অন্তত ২৫টিরও বেশি মামলা করেছেন। এসব মামলায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। অস্ত্রধারীদের মধ্যে চারজনকে র্যাব এবং একজনকে নগর পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। সর্বশেষ ফরিদসহ মোট দুজনকে গ্রেফতার করে নগর পুলিশ। তবে কারো কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।
উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৭ জনকে গ্রেফতার করেছে সিএমপির বিভিন্ন থানা পুলিশ। এর মধ্যে পাঁচজন অস্ত্রধারী রয়েছেন।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা