বিদেশে চিকিৎসায় বছরে ব্যয় ৪ বিলিয়ন ডলার
- বাসস
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫
বিদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিতে প্রতি বছর আমাদের ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ব্যয় হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘স্বাস্থ্য খাতে বিদেশমুখিতা কমাতে দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি’ বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এ তথ্য জানান। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার স্বল্পতা, চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থার ঘটতি, সর্বোপরি সাচ্ছন্দ্য সেবার অভাবে প্রতি বছর অসংখ্য লোক বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিত করে, সমাধানের মাধ্যমে রোগীদের বিদেশমুখিতা কমানো সম্ভব।
দেশে পরিচালিত ল্যাবরেটরিগুলোর মান উন্নয়ন, বাজেট সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে চিকিৎসাশাস্ত্রের গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে শক্তিশালী করায় গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি সদা পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় বর্তমানে আমরা যা কিছু প্রত্যক্ষ করছি, আগামী ২৫ বছর পর তার ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তাই সেরা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি গ্রহণে একটি সঠিক পাঠ্যক্রম থাকা জরুরি।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ডব্লিউটিওর তথ্য মতে বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ মানুষ মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। সেই সাথে স্থানীয় সেবায় প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক মান না থাকায় বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা নেয়ার প্রবণতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ খাতের উন্নয়নে, বিশেষ করে উন্নত অবকাঠামো ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, বাজেট সহায়তা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক হাসপাতালের চেইন কার্যক্রম বাংলাদেশে চালু করা, বিদেশী ডাক্তার ও নার্সদের বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করা, স্বাস্থ্যখাতের সব ধরনের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নের প্রক্রিয়াগত জটিলতা নিরসন এবং ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেসরকারি খাতে হাসপাতাল কার্যক্রম চালুকে উৎসাহিত করতে ‘কর অব্যাহতি’ সুবিধা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের মাথাপিছু ব্যয় ১১০ মার্কিন ডলার, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে ব্যয় হয় ৪০১ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার ১২৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতার কারণে দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেবা নিয়ে থাকে এবং ২০১২ সালে বিদেশে স্বাস্থ্যসেবা নেয়ায় বাংলাদেশীদের ব্যয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিদ্যমান অবস্থা উত্তরণে স্বাস্থ্য খাতের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করা, সরকারিভাবে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা ইন্স্যুরেন্সের আওতায় নিয়ে আসা, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট সহায়তা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পিপিপি মডেলে ঢাকায় আন্তর্জাতিক হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম শুরু, সহায়ক নীতি সহায়তা প্রদানে জোর দেয়ার কথা বলেন মালিক তালহা ইসমাইল বারী।
সেমিনারে বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডা: মো: লিয়াকত হোসাইন, বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এবং সমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: এ বি এম হারুন, ঢাবির ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইকোনোমিক্সের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা: সৈয়দ আব্দুল হামিদ, বিএসএমএমইউর স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের অধ্যাপক ডা: রেজাউল করিম কাজল, ঢামেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সের সেক্রেটারি ডা: আবুল বাসার মো: জামাল, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সেক্রেটারি জেনারেল ডা: মীর সাদউদ্দিন আহমেদ অংশ নেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা