বাধা এলেও আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে পুলিশ
বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সংঘর্ষে ২ পুলিশ আহত- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬
ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধে যত বাধাই আসুক না কেন আদালতের নির্দেশনা বাস্তায়ন করতে পিছপা হবে না ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইতোমধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। গত মঙ্গলবার আদালতের দেয়া নির্দেশনার পর অভিযান আরো জোরালো করেছে মহানগর ট্রাফিক পুলিশ। এতে কয়েকটি স্থানে তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। রিকশাচালকদের সাথে সংঘর্ষে দু’জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আগে থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান চলমান ছিল। তবে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সব বাধা উপেক্ষা করে অভিযান আরো বেগবান করা হবে।
গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করে ট্রাফিক পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণ সিটির দয়াগঞ্জ এলাকায় বিক্ষোভ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। তারা রাস্তা বন্ধ করে অটোরিকশা চালানোর দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লেøাগান দিতে থাকে। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো: ফারুক আহম্মেদ জানান, রিকশা চালকদের অবরোধে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে তাদের অনুরোধ করা হয় সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য। তবে তারা পুলিশের অনুরোধ না শুনে তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে করে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। ওসি বলেন, বর্তমানে সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছে চালকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বেগম রোকেয়া সরণির শেওড়াপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে রিকশা চালকরা। তারাও সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ না থাকলেও ধারণা করা হয় বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ১৩ লাখ রিকশা চলাচল করছে, যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায়ও ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে। রাজধানীর মূল সড়কে কম চললেও অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল অবাধ ও নিয়ন্ত্রণহীন। সুযোগ পেলে মূল সড়কেও দাপিয়ে বেড়ায় এসব রিকশা।
রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, পল্লবী, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান ও ময়নারটেক এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি। তবে কম হলেও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল রয়েছে। ফলে যানজট যেমন বাড়ছে, তেমন নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালালে বাধা আসবে এটা আমরা আগে থেকেই অনুমান করেছি। তবে সেই বাধা অতিক্রম করে কাজ করে যাবে ডিএমপি ট্রাফিক ও ক্রাইম বিভাগের পুলিশ। প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হবে। ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ট্রাফিক) নজমুল হাসান বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। ইতিমধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগেও আমরা বিভিন্ন এলাকায় বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে যেখানেই প্রয়োজন হয়েছে, ক্রাইম বিভাগের সহায়তা নিয়ে সমাধান করা হয়েছে।