লেবানন-গাজায় নিহত আরো ৯৪
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬
ইসরাইলি আগ্রাসন
- ১২ জন প্যারামেডিক নিহত লেবাননে
- হিজবুল্লাহর হামলায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ইসরাইলি শহর
- ইসরাইলকে শাস্তি না দেয়ায় নিন্দা মার্কিন সিনেটরের
লেবাননের রাজধানীতে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ধারাবাহিক হামলার পঞ্চম দিনে গতকাল শনিবার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির দাহিয়েহ, হারেত হরিক এবং চিয়াহ এলাকায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। অন্য দিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রেই লেবাননের দক্ষিণ উপকূলীয় টায়ার এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে নতুন আদেশ জারি করেছেন। অন্য দিকে হিজবুল্লাহর পাল্টা হামলায় উত্তর ইসরাইলের নাহারিয়া শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হযে যায়। খবর : আলজাজিরা, আরব নিউজ ও প্রেস টিভি।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি চিয়াহ শহরের আশপাশে ‘শত্রু বিমানের’ বিমান হামলার সময় উপরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে এমন ছবি দেখানো হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বৈরুতে আইডিএফ-এর সর্বশেষ উচ্ছেদ নির্দেশনার পর লেবানিজ মিডিয়ায় ওই এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলার খবর দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আইডিএফ বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। তার আগে আইডিএফ জানায়, তারা কিছুক্ষণ আগে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে হিজবুল্লাহ অবকাঠামোর বিরুদ্ধে আরেকটি বিমান হামলা সম্পন্ন করেছে। হামলার আগে আইডিএফ হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত ভবনের আশপাশের বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় বলেও দাবি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর আগে ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় লেবাননে অন্তত ১২ জন প্যারামেডিক নিহত হন।
স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এসব ব্যক্তির নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস নিন্দা জানিয়েছেন। শনিবার এক্সে দেয়া এক বার্তায় ডব্লিউএইচও প্রধান জানান, লেবাননের আলবেক জেলা দোউরেস গ্রামের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কেন্দ্রে বিমান হামলায় ১২ জন প্যারামেডিক নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় ওই কেন্দ্রটিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই। এর আগে লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় গত শুক্রবার ইসরাইলের চালানো বিভিন্ন হামলায় কমপক্ষে ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ১৮২ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ৩ হাজার ৪৪৫ জন নিহত হয়েছেন।
আর আহত মানুষের সংখ্যা ১৫ হাজার ৫৯৯। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লেবাননে সময় সময় হামলা চালিয়ে আসছিল ইসরাইল। তবে এক মাসের বেশি সময় ধরে তারা লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে জোরালো হামলা চালাচ্ছে। চালানো হচ্ছে স্থল অভিযানও।
বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন শহর : এ দিকে, লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদল হিজবুল্লাহর ছোড়া ড্রোনের আঘাতে উত্তর ইসরাইলের নাহারিয়া শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘিœত হয়েছে। ইরানপন্থী হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলার পর নাহারিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল শনিবার ইসরাইলের চ্যানেল ১২-এর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রেসটিভি।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর একটি ড্রোন নাহারিয়া শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আছড়ে পড়ে। ড্রোনটি ইসরাইলি বিমানবাহিনী প্রতিহত করে এবং এটি ভেঙে পড়ার সময় এর কিছু অংশ একটি ভবনে আঘাত করে। এ ছাড়া ইসরাইলি প্রশাসন জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর ছোড়া ড্রোন ও রকেটের কারণে নাহারিয়া, পশ্চিম গ্যালিলি ও আশপাশের এলাকায় সাইরেন বেজে উঠেছে। হিব্রু ভাষার গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, লেবানন থেকে গ্যালিলি অঞ্চলের দিকে রকেট হামলা চালানো হয়েছে।
আলজাজিরার তথ্য অনুযায়ী, গ্যালিলির দিকে অন্তত ১০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার পর বেতজেট, রোশ হানিকরা, লেহমান, গেশের হাযিভ, মিলুয়ট শিল্পাঞ্চল, বেতজেট বিচ এবং সা’আরসহ উত্তরের একাধিক স্থানে সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে।
গাজায় নিহত আরো ৩৫ : অন্য দিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় আরো ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়াল ৪৩ হাজার ৭৯৯ জন। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৩৫ জন নিহত এবং আরো ১১১ জন আহত হয়েছেন।
অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছতে পারছেন না। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্তে হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মার্কিন সিনেটরের নিন্দা : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরাইলকে শাস্তি না দিয়ে উল্টো মদদ দেয়ায় জো বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রগতিশীল মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন। ইসরাইলকে নৃশংসতা বন্ধ করতে না পারাকে বাইডেন প্রশাসনের একটি গুরুতর ভুল হিসাবে বর্ণনা করেছেন ওয়ারেন।
মার্কিন এ সিনেটর বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতা বিশ্বব্যাপী আমেরিকান বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণœ করেছে। তিনি বলেন, যদি এই প্রশাসন কাজ না করে, কংগ্রেসকে অবশ্যই মার্কিন আইন প্রয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং একটি যৌথ রেজুলেশনের মাধ্যমে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা