০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`

আ’লীগ সরকার অর্থ লুটপাটের জন্য উন্নয়ন বয়ান সৃষ্টি করেছিল : ড. দেবপ্রিয়

-

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার অর্থ লুটপাটের জন্য উন্নয়ন ও প্রকল্পের নামে নতুন বয়ান সৃষ্টি করেছিল। সেই সরকারের আমলে প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। এই কথাগুলো বলেছেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্প নেয়ার আগেই জমি কিনে বেশি দামে প্রকল্পের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তারা জানতো এখানে জমি কিনলে তিন গুণ দামে বিক্রি করা যাবে, এভাবে সরকারের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। অন্যদিকে জমি বিক্রি করে লাভবান হওয়ার জন্য যেসব জায়গাতে প্রকল্প নেয়ার কোনো উপকারিতা নাই, সেখানে প্রকল্পগুলো করা হয়েছে। ঠিকাদারদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও অনিয়ম করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি ভবনে ৮৫ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ৩২ জন সচিব এবং সিনিয়র সচিবদের সাথে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, প্রায় সব প্রকল্পই রাজনৈতিক প্রভাবে অনুমোদিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেই সময় উন্নয়নের নামে যে বয়ান সৃষ্টি করা হয়েছিল এর বিপক্ষে কেউ কিছু করতে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মাধ্যমে যে সরকারি অর্থের লুণ্ঠন হয়েছে, তাতে উন্নয়ন প্রশাসনের কী ভূমিকা ছিলÑ শ্বেতপত্র কমিটির এ প্রশ্নের উত্তরে আমলারা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইপ্রক্রিয়ায় দুর্বলতা ছিল। অনেক ক্ষেত্রে আবার ইচ্ছা করে দুর্বল প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। অনেক প্রকল্প ভুলভাবে টেকসই দেখানো হয়েছে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেন, অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংযোগের কারণে দুর্নীতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে হাইটেক পার্ক, কর্ণফুলী টানেল, জ্বালানি খাত, কর আহরণ, সামাজিক খাত, ব্যাংক ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের উন্নয়নে সক্ষম, স্বাধীন এবং যোগ্য পেশাজীবীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা যাতে কোনো বাধার সম্মুখীন না হন সে বিষয়ে জানিয়েছেন বলেও দেবপ্রিয় উল্লেখ করেছেন।
আমলারা মনে করছেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নয়নে পেশাগতভাবে দক্ষ আমলাতন্ত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেমন কেন্দ্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি স্থানীয় পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ। তুলনামূলক স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দাবি করেছেন তারা।
সক্ষমতা, সদিচ্ছা, সমন্বয় তিনটি ক্ষেত্রেই ভবিষ্যতে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করছেন আমলারা। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমলাদের মধ্যে এক ধরনের সততা ও আন্তরিকতা দেখা গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement