১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩০, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

রামুতে কল্পজাহাজ ভাসানো উৎসবে মেতেছেন বৌদ্ধরা

রামুতে কল্পজাহাজ ভাসানো উৎসবে অংশ নেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা : নয়া দিগন্ত -

ফানুস উৎসবের বর্ণিল আয়োজনে আকাশ রাঙানোর পর এবার প্রবারণায় কল্পজাহাজ ভাসানোর আনন্দে মেতেছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়।
অপূর্ব কারুকাজে তৈরি একেকটি দৃষ্টিনন্দন জাহাজ নৌকায় বসিয়ে ভাসানো হচ্ছে নদীতে। জাহাজগুলো যাচ্ছে নদীর এপার থেকে ওপারে। সেই জাহাজে চলছে শত শত প্রাণের উচ্ছ্বাস। এতে নদীর দুইপাড়ে হাজারো নর-নারী আনন্দে মেতেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীর পূর্ব রাজারকুল ঘাটে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী কল্পজাহাজ ভাসানো উৎসব।
বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে যুগ যুগ ধরে বাঁকখালী নদীতে কল্পজাহাজ ভাসা উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। এবার ভাসানো হয় পাঁচটি কল্পজাহাজ।
বিকেলে উৎসবের ঘাটে দেখা যায়, লোকে লোকারণ্য নদীর দুই পাড়। গান-বাজনা, কীর্তন ও ফানুস ওড়াউড়িতে মেতে উঠেছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠের নৌকার ওপর বসানো হয়েছে একেকটি কল্পজাহাজ। আবার ইঞ্জিন নৌকাও দেখা যায় দু’টি জাহাজে। পানিতে ভাসছে পাঁচটি কল্পজাহাজ।
মূলত বাঁশ, কাঠ, বেত ও রঙিন কাগজে রঙের কারুকাজে জাদি, হাঁস, ময়ূর, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব কল্পজাহাজ। চমৎকার নির্মাণ শৈলী আর বৈচিত্র্যে ভরা প্রতিটি জাহাজই যেন নিজস্ব স্বকীয়তায় ভরপুর।
এসব ভাসমান জাহাজে চলছে বৌদ্ধ কীর্তন চলছে। কেউ নাচছে, কেউ গাইছে আবার কেউ ঢোল কাঁসাসহ নানা বাদ্য বাজাচ্ছে। শিশু কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখে মনে হবে এখনই যেন বাঁধ ভাঙবে!
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের প্রধান প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে এ জাহাজ ভাসা উৎসবের প্রচলন হয় পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে। সে দেশের মুরহন ঘা নামক স্থানে একটি নদীতে মংরাজ ম্রাজংব্রান প্রথম এ উৎসবের আয়োজন করেন। শত বছর ধরে রামুতে মহাসমারোহে এ উৎসব হয়ে আসছে।
বিকেল ৩টার দিকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া। উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিথুন বড়ুয়া বোথামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান কাজল।

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, ভিক্ষুরা আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত, এই তিন মাস বর্ষাব্রত পালন করেন। আর এই বর্ষাব্রত পালন শেষে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথিতে তারা প্রবারণা করেন। স্বাভাবিক সসময়ে প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে পরবর্তী এক মাস বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত হয় কঠিন চীবর দান।


আরো সংবাদ



premium cement