২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সম্মাননা প্রত্যাখ্যান তথ্য উপদেষ্টার

তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম জাতীয় জাদুঘরে গ্রাফিতি প্রদর্শনী ও বিপ্লবের লাল কবিতা পাঠ আয়োজনের উদ্বোধন করেন : পিআইডি -


রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দেয়া সম্মাননা গ্রহণ করেননি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম। মঞ্চে বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বিরোধী কলাম লেখক দুই শিক্ষককে সম্মাননা দেয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের মুখে তিনি এই সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গতকাল দুপুর সোয়া ২টায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকমঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ না করার এই ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। পরে প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য উন্মুক্ত করা হলে মঞ্চের সামনে থাকা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম এবং গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম নামের দুই শিক্ষার্থী তাকে প্রশ্ন করেন। রাইসুল ইসলাম নাহিদ ইসলামকে লক্ষ করে বলেন, ‘আপনার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলতে চাই যারা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছে, লেজুরবৃত্তি করেছে, তারা এখনো বহাল আছে। আমাদের এই মঞ্চে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর কমলেশ চন্দ্র দাস আছেন। উনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। সেই পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মশিউর রহমান, যিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আজ মঞ্চে এবং তাকে সম্মাননা স্মারক দেয়া হলো।

মঞ্চে কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান স্যার উপস্থিত আছেন। তিনি বিগত ১৩ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠে একটি কলামে লেখেন আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরও পরিস্থিতি সামলানোর পর্যায়ে ছিল। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে চাই আবু সাঈদের প্রাণের বিনিময়ে আর কী সামলানোর মতো ছিল, সেটা ওনার কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাই। ওনাকেও স্মারক সম্মাননা দেয়া হলো। তাহলে তখন আমরা আন্দোলন করে যদি আজ আমরা দেখতে পাই যে, যারা স্বৈরাচারের দোসরের ভূমিকায় ছিলেন তাদের মঞ্চে বসানো হচ্ছে, সম্মাননা স্মারক দেয়া হচ্ছে, আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
এ সময় প্রশ্নের উত্তর দিতে এসে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারে থেকেও বিভিন্ন জায়গায় বলেছি এবং যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারাও এ কথাটি বলছেন, আমাদের অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। প্রয়োজনে আরো একটি গণঅভ্যুত্থান করতে হতে পারে। আমরা মনে করছি ফ্যাসিষ্ট কাঠামো এখনো রয়েছে। আমাদের একদফা দাবি ছিল সেই ফ্যাসিবাদি শাসনব্যবস্থার বিলোপ ঘটানো। সেটি যেমন রাষ্ট্রে, সমাজে একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়েও বিদ্যমান রয়েছে। ’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই (রোকেয়া) বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভিসি এসেছেন। তার কাছে আমার আবেদন থাকবে যাতে এসব বিষয় তিনি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখেন। আপনারা যে অভিযোগ করলেন, সে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু এই মঞ্চ থেকে যারা ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগ এবং স্বৈরাচারের দোসর তাদের স্মারক সম্মাননা দেয়া হয়েছে। ফলে একই মঞ্চ থেকে আমাকে যে সম্মাননাটি দেয়া হয়েছে এটি আমি গ্রহণ করছি না। হয়তো কোনো এক দিন ফ্যাসিবাদমুক্ত এই বেরোবিতে আসব। আপনাদের সব দাবি-দাওয়া পূরণ করার সক্ষমতা নিয়ে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়াব। সেদিনই আমি এই সম্মাননাটি গ্রহণ করব।’

এসময় মুহুমূর্হ করতালি দিয়ে তাকে অভিননন্দিত করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মঞ্চে থাকা অভিযুক্ত কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান মাইক নিয়ে বলেন, আমার কলাম আন্দোলনের বিপক্ষ ছিল না। তবুও যেহেতু শিক্ষার্থীরা আমার কলামকে ভালোভাবে নেননি। সে কারণে আমি আজকের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাহার করে নিলাম। এরপর তিনি মঞ্চে বসে থাকা অভিযুক্ত আরেক শিক্ষক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ড. কমলেশ চন্দ্র দাসের পাশে গিয়ে বসেন। নাহিদ ইসলাম মঞ্চ ছাড়ার পর তারা মঞ্চ ছাড়েন।

যেসব গণমাধ্যম গণহত্যার পক্ষে ছিল তাদেরও বিচার হবে
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, তথ্য উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম জুলাই-আগস্ট গণহত্যার পক্ষে যেসব গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে কাজ করেছে তাদের বিচার করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলা হয়েছে এবং কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছে। আরো যাদের সম্পৃক্ততা আছে তদন্তসাপেক্ষে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি গতকাল সকাল ৯টায় ঢাকা থেকে রংপুরে যাওয়ার পথে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে দৈনিক নয়া দিগন্ত সৈয়দপুর প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
এ সময় তাকে নীলফামারী জেলা ও সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন এবং সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াত শিবিরের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কর্মসূচিতে যোগদানের উদ্দেশে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর আসেন। এই সফরে তার সাথে ছিলেন নাগরিক ঐক্য কমিটির সদস্যসচিব আকতার হোসেন। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক নায়িরুজ্জামান, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর ই আলম সিদ্দিকী, উপজেলা জামায়াতের আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
হাটহাজারীতে সা’দপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে ওলামা পরিষদের বিক্ষোভ-মিছিল ফের পাকিস্তান থেকে এলো জাহাজ, এবার রয়েছে যেসব পণ্য কাবাঘরে ‌‘জয় বাংলা' স্লোগান’, পরিচয় জানা গেল সেই যুবকের গাজীপুরে বেক্সিমকোর বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ‘জনশক্তি’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি : জাতীয় নাগরিক কমিটি ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আনা হবে’ ঐক্যবব্ধভাবে জুলুম-নির্যাতনকারীদের প্রতিরোধ করতে হবে : অধ্যাপক মুজিবুর বাউফলের ধানদী কামিল মাদরাসা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পুঁজিবাজারে অস্থিরতায় রেগুলেটরদের দুষলেন অর্থ উপদেষ্টা ইসলাম নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে : হাসান সরকার ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৪১

সকল