১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

শেয়ারবাজারে মুনাফা তুলতে বিক্রির চাপ

ডিএসইর বাজারমূলধন ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা বাড়ল
-


দেশের পুঁজিবাজারে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। একটি সপ্তাহ পর হলে দেখা যায় পুরো সময়টাই থাকে মন্দা আর শেয়ার ছেড়ে দেয়ার চাপ। গত সপ্তাহে বেশি বিক্রির চাপ ছিল ব্যাংক ও টেলিকম খাতের কোম্পানির শেয়ারগুলো। সার্বিকভাবে ডিএসইতে সপ্তাহজুড়ে গড়ে বিক্রির চাপ ছিল ৫৩ শতাংশ আর কেনার চাপ ছিল ৪৭ শতাংশ। লেনদেনের চার দিনের তিন দিনই ছিল বিক্রির চাপ। ডিএসইতে বাজারমূলধন দুই হাজার ৩০১ কোটি টাকা বেড়েছে। গড় ও মোট লেনদেন কমেছে বলে দুই বাজারের সাপ্তাহিক তথ্য বিশ্লেষণে এসব জানা গেছে।

সাপ্তাহিক লেনদেনের তথ্য থেকে দেখা যায়, মূল্যসূচক গত সপ্তাহেও হারালো ডিএসই। শেষদিন ভালো অবস্থায় ফিরে আসায় বাজারমূলধনে দুই হাজার ৩০১ কোটি টাকা ফিরে এসেছে। তিন দিনই বিক্রেতাদের চাপ ছিল পুঁজিবাজার। শেষদিন এসে ৯৯ শতাংশ ছিল ক্রেতার চাপ। ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০.৫২ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৮৬ পয়েন্ট, এসএমই সূচক ৫৮.১৫ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ১৫.৪ পয়েন্ট কমেছে। ব্লক মার্কেটে এখানে লেনদেন হয়েছে মোট ৭৮ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার টাকার। আর এসএমইতে ২১ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে গেল সপ্তাহে গড়ে লেনদেন টাকায় কমেছে ১৩.৯৭ শতাংশ। যেখানে আগের সপ্তাহে ৪২৬ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছিল সেখানে সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে হয়েছে ৩৬৬ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকার। ফলে লেনদেন কমেছে ৫৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকার। গেল সপ্তাহে গড়ে শেয়ার হাতবদলও কমেছে। এটা কমেছে ১৮.৯৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে যেখানে ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজারটি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছিল, সেখানে বিদায়ী সপ্তাহে তিন কোটি ৯ লাখ কমে হাতবদল হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দরবৃদ্ধিতে ছিল ২৯৪টি, দরপতনে ১৪৬টি, দর অপরিবর্তিত ৩৮টি এবং কোনো লেনদেনে আসেনি ১৭টি কোম্পানি।

পুরো সপ্তাহে ডিএসইতে ৫২ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট এক হাজার ৪৬৬ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। সেখানে আগের সপ্তাহে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছিল মোট দুই হাজার ১৩১ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। ফলে বিদায়ী সপ্তাহে মোট শেয়ার লেনদেন ২৮ কোটি ৭০ লাখ কমে যাওয়ায় টাকায় লেনদেন কমেছে ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ। তবে সার্বিক ভাবে মূলধন ফিরেছে দুই হাজার ৩০১ কোটি টাকার বেশি। সপ্তাহ শেষে মূলধন ০.৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারমূলধন এখন ডিএসইর ছয় লাখ ৭৪ হাজার ৪১৬ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

সপ্তাহে দরবৃদ্ধিতে শীর্ষ কোম্পানি
ডিএসইর দেয়া তথ্যানুযায়ী, গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২২.৯৯ শতাংশ। আর দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরডি ফুডের ১৬.৭৪ শতাংশ, ফু-ওয়াং ফুডের ১৪.৭৫ শতাংশ, ফু-ওয়াং সিরামিকের ১১.৪৮ শতাংশ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসের ১০.৬২ শতাংশ, সালভো কেমিক্যালের ১০.৬২ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের ১০.৫০ শতাংশ, ইনট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের ১০.১৯ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিমের ৯.৯৯ শতাংশ এবং প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৯.৩৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

সপ্তাহে দরপতনে শীর্ষ কোম্পানি
গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর পতনের শিকার মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৫.২১ শতাংশ কমেছে। দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের ১০.৬৪ শতাংশ, রানার অটোমোবাইলসের ১০.৩৪ শতাংশ, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯.৬৩ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ৮.৪২ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের ৭.৬৪ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩.৩৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৭.৩২ শতাংশ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৭.২৬ শতাংশ এবং চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৭.২৩ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।

ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ লেনদেনে ১০ কোম্পানি:
তাদের ব্লক মার্কেটে গেল সপ্তাহে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১০ কোম্পানির। কোম্পানিগুলো হলো- অগ্নি সিস্টেম, খান ব্রাদার্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, লাভেলো আইস্ক্রিম, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, বিকন ফার্মা, এনআরবিসি ব্যাংক এবং স্কয়ার ফার্মা। এদের মধ্যে অগ্নি সিস্টেমের সবচেয়ে বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ৪১ টাকা ২০ পয়সা। এরপর খান ব্রাদার্সের ৮ কোটি ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১৪২ টাকায়। আর বেক্সিমকোর ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গেল সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া অন্য সাত কোম্পানির মধ্যে- লাভেলো আইস্ক্রিমের ৬ কোটি ১৭ লাখ টাকার, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৫ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকার, বিকন ফার্মার ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের এক কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকার এবং স্কয়ার ফার্মার এক কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টকে সূচক কমেছে সেঞ্চুরিতে
গেল সপ্তাহ চট্টগ্রাম স্টক মার্কেটের (সিএসইর) ভালো যায়নি। সবগুলো সূচকই সেঞ্চুরির বেশি হারে পয়েন্ট হারিয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানি দর পতনের শিকার ছিল। লেনদেনেও খরা ধরেছে। সিএএসপিআই ১৩৬.৪৩ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১৫ হাজার ১৩৫.৩৪ পয়েন্টে, সিএসই-৩০ সূচক ১৫৪.৯৩ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১২ হাজার ৩০১.৪১ পয়েন্টে, এসএমই সূচক ১১৪.৪১ পয়েন্ট হারিয়ে দুই হাজার ৪৬১.০২ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স ৮২.৬৫ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ৯ হাজার ১৯২.৩৮ পয়েটে নেমেছে।
পুরো সপ্তাহে ৯৯ লাখ ৮ হাজার ১৩০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মাত্র ৩৫ কোটি ৭ লাখ ৭০ হাজার ১৬ টাকা বাজারমূল্যে। ২৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়। এদের মধ্যে দরবৃদ্ধিতে ছিল ১১৪টি, দর পতনের শিকার ১৫৪টি এবং দর অপরিবর্তিত হলো ২৬টি। বাজারমূলধনে বর্তমানে এ শ্রেণীর কোম্পানির ৭৩.৩৩ শতাংশ, বি শ্রেণীর ৯.৪৪ শতাংশ, এন শ্রেণীর কোম্পানির ১৫.৩০ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর কোম্পানির ১.৯৩ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
অর্থ পাচারে জড়িত আ’লীগের ৭০ মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না: তথ্য উপদেষ্টা লেবাননে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরাইলি হামলা : বিশ্বজুড়ে নিন্দা কালেমাখচিত কালো পতাকা মিছিলের নেপথ্যে কারা বিভক্ত জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না : ডা: শফিকুর রহমান ১০০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি, নিম্নমুখী ডিমের দাম গুলিতে নেসারের বাহুর হাড় টুকরা টুকরা হয়ে গেছে লুটপাটই সাধনের সাধনা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে : রিজভী নোবেল শান্তি পুরস্কার পেল জাপানের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে বাংলাদেশী জেলে হত্যার প্রতিবাদ ঢাকার

সকল