১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

মসজিদ-মন্দির একই উঠানে

মসজিদ-মন্দির একই উঠানে -


একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির। এক পাশে ধূপকাঠি, অন্যপাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, অন্যপাশে চলছে জিকির। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে মসজিদ ও মন্দির। ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দিরটি একই উঠানে রয়েছে। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন। এখন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব।

স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালীমন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় একই স্থানের পাশে লালমনিরহাট শহরে কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার এলাকায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ পড়ার জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। আর সেটির নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ। ওই সময় থেকে এক উঠানে চলছে কার্যক্রম। পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেন। একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির হওয়ার পর এ পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনকি মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এই মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন। এবার লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ৪৭৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব চলছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬০টি, আদিতমারীতে ১১৬টি, কালীগঞ্জে ৯৪টি, হাতীবান্ধায় ৭৩টি ও পাটগ্রামে ৩০টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাক ঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে কালীবাড়ি মন্দির। আজানের পর নামাজ শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না। শৃঙ্খলা বজায় রেখে একই উঠানে মন্দির ও মসজিদে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন উভয় ধর্মের মানুষ।
ওই এলাকায় ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান, লালমনিরহাটে ধর্মীয় সম্প্রীতির এটি একটি দৃষ্টান্ত। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করছেন তারা। সত্যি এটি আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের বিষয়।

মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পুরান বাজার মসজিদের পাশেই একসাথে দু’টি প্রতিষ্ঠান। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবুও এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবশ্রেণীর মানুষ স্বাধীনভাবে ঘুরতে আসে। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাকঢোলসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। আজ পর্যন্ত কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই চলছে এ সম্প্রীতির বন্ধন।
কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, এলাকার বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবে চলতে দেখছেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ এক উঠানে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
অর্থ পাচারে জড়িত আ’লীগের ৭০ মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না: তথ্য উপদেষ্টা লেবাননে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরাইলি হামলা : বিশ্বজুড়ে নিন্দা কালেমাখচিত কালো পতাকা মিছিলের নেপথ্যে কারা বিভক্ত জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না : ডা: শফিকুর রহমান ১০০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি, নিম্নমুখী ডিমের দাম গুলিতে নেসারের বাহুর হাড় টুকরা টুকরা হয়ে গেছে লুটপাটই সাধনের সাধনা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে : রিজভী নোবেল শান্তি পুরস্কার পেল জাপানের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে বাংলাদেশী জেলে হত্যার প্রতিবাদ ঢাকার

সকল