০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

দেশ নিয়ে যেকোনো অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে : তথ্য উপদেষ্টা

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সাথে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুছি তোমোহিদ সাক্ষাৎ করেন : পিআইডি -

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে যেকোনো ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সঠিকভাবে মিডিয়াতে প্রচার করতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানী ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে ‘দ্য ক্রস-বর্ডার স্প্রেড অব মিসইনফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, এই আন্দোলনকে নিয়ে ভারতসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানের অন্যতম আন্দোলনকারী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। ভারতের পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’ কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই মাহফুজ আলম সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছে। সেই একই সুর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিফলিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের অপপ্রচারকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা কোনোক্রমে কাম্য নয়। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানান।
সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই আন্দোলন কেবল ৩৬ দিনের আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন হচ্ছে গত ১৬ বছরে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। এই অভ্যুত্থান কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতৃত্বে হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন ভাবে এই অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে- এ কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানকে ইসলামিক উগ্রবাদের সাথে মিলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারে সত্য নয়। সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানকে বিপ্লবে রূপ দিতে হবে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া তৈরি করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই সব ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ। ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব কমিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য’
কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব কমিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম। গতকাল ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুছি তোমোহিদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
ইচিগুছি তোমোহিদে বলেন, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বড় সম্ভাবনাময় দেশ। কিন্তু বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ভালো চাকরির সুযোগ না থাকায় আমরা বাংলাদেশে নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি করতে চাই পাশাপাশি বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এক হাজার তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষণ দিতে চাই। জাপানের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য কারণ এ কর্মসংস্থানের কারণেই আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। কর্মসংস্থান তৈরিতে জাইকার যেকোনো বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকলে তা বিবেচনা করা হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জাপান এবং জাইকার কাছে আরো বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে। এসময় জাইকা প্রতিনিধি বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জনপ্রশাসন সংস্কার এ দু’টি এজেন্ডা নিয়ে আমরা কাজ করতে আগ্রহী। এসময় তিনি বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নেও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো: মুশফিকুর রহমান, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, জাইকা বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি কমোরি তাকাশি, প্রতিনিধি কুককামি মিনামি এবং জাইকা বিশেষজ্ঞ সোজি আকিহিরো উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement