০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে বলল গণতন্ত্র মঞ্চ

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিনিধি দলের সংলাপ : পিআইডি -


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ আরো বাড়াতে বলেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। দরকার হলে তাদের সাথে নিয়মিত বৈঠকের একটা কাঠমো তৈরি করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সংলাপ শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসব কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন, আমরা স্পষ্ট করে আমাদের মতামত দিয়েছি। আমরা বলেছি, সংস্কার আমাদের (রাজনৈতিক দল); পার্টিকুলারলি বলেছিলাম, আমরা একটা সরকার বদলানোর আন্দোলন করছি না, নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি না। সামগ্রিকভাবে আন্দোলন করছি, যাতে নির্বাচনব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়ায় একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করা যায়। আবার যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। সে কারণে সংস্কার প্রয়োজন।
মান্না আরো বলেন, সংস্কারের জন্য প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করব আমরা। আমরা প্রশাসনের কিছু দুর্বলতা দেখছি, ব্যর্থতা দেখছি, সীমাবদ্ধতা দেখছি। সিভিল পুলিশসহ প্রশাসনে এমন কিছু দেখছি, যা উদ্বেগ প্রকাশ করার মতো। এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সংস্কারের একটা শর্তই হচ্ছে, সবাই মেটা গ্রহণ করবে। ন্যূনতম ঐক্যের প্রচেষ্টা তাদের করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরাসহ সব রাজনৈতিক দল সরকারকে সহযোগিতা করব।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা বলেছি, যতদূর পর্যন্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সংস্কার করতে পারব, ততদূর পর্যন্ত আমরা সংস্কার করব। বাকি যেসব সংস্কার দরকার, তা পরের নির্বাচিত সরকার এসে করবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে আলাপ-আলোচনা করার একটা কাঠামো তৈরি করা দরকার। জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল হতে পারে। যেখানে অংশীজনেরা বসবেন। সরকার যেহেতু অংশীজনের সমর্থনে দাঁড়িয়ে আছে।

সাম্প্রদায়িক হামলা, মাজারে হামলা, নারীর ওপর হামলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলোকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে প্রচারণা চলছে, সে ক্ষেত্রে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, সামগ্রিকভাব এ ভূমিকা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সামনে কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাবো।
জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক নির্বাচন, দেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা ও আইনের সংস্কার এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এই দেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ও নতুন নির্বাচন একে অপরের পরিপূরক। গণতান্ত্রিক উত্তোরণের জন্য জরুরি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। পুরনো সিন্ডিকেট আবার যে নতুন চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে, সেটা নিয়ে আমরা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছি। তারা বলেছেন, চারটা কাজকে অগ্রাধিকারের মধ্যে নিয়েছেন, তার মধ্যে সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। আমরা দেখতে চাই মানুষ যেন এর সুফল পায়। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য যাতে বন্ধ হয়।
এ দিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাথে সংলাপ করে গণতন্ত্র মঞ্চের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আবু ইউসুফ সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন।

 


আরো সংবাদ



premium cement