০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বৈরী আবহাওয়ার কবলে ফের সাগরে মাছ শিকার

-

আবার বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ সারা দেশের জেলেদের সাগরে মাছ ধরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাজার হাজার জেলে, ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
এক দিকে বৈরী আবহাওয়া, অপর দিকে সাগরে ইলিশের আকালের কারণে কাক্সিক্ষত মাছ আহরিত হয়নি। ফলে দেশে এবার ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের পাতে ওঠেনি সাধের এই জাতীয় মাছ।
গত ৩ অক্টোবর থেকে ফের বৈরী আবহাওয়ার বিরাজ করায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হাজার হাজার মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে উপকূলে ফিরছে। গত ২৩ জুলাই রাতে দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরে কয়েক হাজার মাছধরা ট্রলার গভীর সাগরে মাছ আহরণে ছুটে চলার মাঝ পথেই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে উপকূলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে যতবারই মাছ আহরণের উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রলার মালিকরা, ততবারই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছেন জেলেরা।
এ দিকে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ আহরণ ও বিক্রির উপর কঠোর বিধি নিষেধ চলবে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী শেখেরখীল বোর্ড মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর কোম্পানি জানিয়েছেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ বার মাছ আহরণে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে। এ ছাড়া এবার কাক্সিক্ষত ইলিশ না পাওয়ায় ট্রলার মালিকদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, তার সমিতিতে দুই শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল দুপুর পর্যন্ত শতাধিক ট্রলার প্রায় শূন্য হাতে কূলে ফিরেছে।
একই উপজেলার চাম্বল বোর্ড মালিক সমিতির সভাপতি হেফাজতুল ইসলাম বলেন, তার সমিতিতে দেড়শতাধিক মাছধরার ট্রলার রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক মাছধরার ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে।
একইভাবে গতকাল বিকেলে যোগাযোগ করা হলে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতি, চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে ইলিশ আহরণ প্রতিবারই বাধাগ্রস্ত হয়েছে বৈরী আবহাওয়ার কারণে। এ পর্যন্ত অন্তত ৮ থেকে ১০ বার বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রলারগুলো ফিরে আসতে হয়েছে। এবার সাগরজুড়ে চলছে ইলিশের আকাল। ৩ সেপ্টেম্বর থেকে আবারো বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাদের সমিতির শত শত মাছধরা ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে।
এ দিকে গতকাল আবহাওয়া অধিদফতরের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্রবন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেইসাথে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সামুদ্রিক মৎস্য দফতর, চট্টগ্রামের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো: জহিরুল হক বলেন, জেলায় প্রায় ২৬৭টি বড় এবং পাঁচ হাজারের বেশি ছোট কাঠবডি মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেগুলো ইতোমধ্যে নিরাপদ আশ্রয় নিতে কূলে ফিরতে শুরু করেছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement