০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`

আস্থাসঙ্কটে বিক্রির চাপ উঠল ৭০ শতাংশে

-

- সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা উধাও ২ পুঁজিবাজার থেকে
- বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আলটিমেটাম
- ১ বছরের মধ্যে ৫ গুণ খারাপ হলো পুঁজিবাজার
- ডিএসইতে ৮৩.৫৮ শতাংশ কোম্পানি দরপতনে

দিন দিন দেশের পুঁজিবাজারে আস্থার সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে। অব্যাহত দর পতনে আবারো এই আস্থার সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। পটপরিবর্তন দেশের পুঁজিবাজারে কোনো উন্নতি আনতে পারেনি। বিনিয়োগকারীরাও বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ৭০ শতাংশ বিক্রির চাপে ছিল গত সপ্তাহে। তারা টাকা তুলে নিচ্ছে। এসব কারণে গেল সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে ২৫ হাজার ৬১০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। ফলে বাজারমূলধনে শুষ্কতাও দেখা দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচগুণ খারাপ হয়েছে গেল সপ্তাহে। লেনদেন থেকে শুরু করে সূচক ও দরপতনের মাত্রা গেল সপ্তাহে বেড়েছে। ডিএসইতে ৮৩.৫৮ শতাংশ কোম্পানি শেয়ারদর হারিয়েছে। হতাশায় বিনিয়োগকারীরা মাঠে নেমেছেন। রোববার পর্যন্ত সময় দিয়েছে বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগে। এদিকে, বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুঁজিবাজারে পিই রেশিও যত কম বিনিয়োগ ঝুঁকিও তত কমে। পাশাপাশি পিই রেশিও বাড়লে বিনিয়োগ ঝুঁকি বাড়ে। বিদায়ী সপ্তাহে পিই রেশিও যেহেতু কমেছে, শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিও তেমনি কমেছে।

ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, গেল সপ্তাহের প্রতিদিনই পুঁজিবাজারের সূচকের চলাপথ ছিল পাগলাঘোড়ার মতো। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মতোই সূচকের উত্থান-পতনের চিত্র ছিল। অনুমান করা যায়নি দিনশেষে পরিণতি কী হবে? সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আরো ১৭৬.৫৫ পয়েন্ট বা ৩.১৩ শতাংশ কমে পাঁচ হাজার ৪৬২.৫৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। আর পুরো সপ্তাহে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৪০.৬৭ পয়েন্ট বা ৩.২২ শতাংশ হারিয়ে এক হাজার ২২১.২৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭৪.০৮ পয়েন্ট বা ৩.৫৯ শতাংশ হারিয়ে এক হাজার ৯৯০.৮৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অন্যদিকে, ডিএসএমইএক্স সূচক ৫৮.৩৩ পয়েন্ট বা ৪.৭৪ শতাংশ হারিয়ে এখন এক হাজার ১৭২.৯৭ পয়েন্টে। গত বছরের এই দিনের তুলনায় সূচক হারানোর হার পাঁচগুণ বেড়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৭টির, কমেছে ৩৩১টির বা ৮৩.৫৮ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টি প্রতিষ্ঠানের দাম। ডিএসইতে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার বাজারমূল্য দুই হাজার ১৩১ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ৩৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে এক হাজার ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গড় লেনদেন কমেছে টাকায় ৩৭.২৫ শতাংশ। যেখানে আগের সপ্তাহে গড়ে ৬৭৯ কোটি ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় গড়ে ২২ কোটি ৫৩ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছিল, সেখানে সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে সেটা ছিল ৪২৬ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় গড়ে ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। সদ্যবিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজারমূলধন ছিল ছয় লাখ ৮৫ হাজার ৬২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস লেনদেন শেষে বাজারমূলধন এক দশমিক ৯৭ শতাংশ উধাও হয়ে দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ১১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারমূলধন কমেছে ১৩ হাজার ৫৫০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এসএমই মার্কেটে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলে ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণের তথ্য থেকে জানা গেছে।

ব্লকে ১০ প্রতিষ্ঠানের ৮৭.৬৬ কোটি টাকার ট্রেড
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এডিএন টেলিকম, ইফাদ অটোস, বিডি ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, বেক্সিমকো, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, আলহাজ টেক্সটাইল এবং আইসিবি সোনালী ব্যাংক ওয়ান মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এই ১০ প্রতিষ্ঠানের মোট ৮৭ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৬১ টাকা ৫০ পয়সায়। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ২২৫ টাকা ৪০ পয়সা। এডিএন টেলিকমের ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া অন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে- ইফাদ অটোসের সাত কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বিডি ফাইন্যান্সের সাত কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের চার কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর তিন কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের তিন কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার, আলহাজ টেক্সটাইলের দুই কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার এবং আইসিবি সোনালী ব্যাংক ওয়ান মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এক কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩২.৩৯ শতাংশ। দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আফতাব অটোমোবাইলসের ১৬.৭২ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের ১৩.৬৮ শতাংশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ১২.২৩ শতাংশ, শামপুর সুগার মিলসের ৮.৮৯ শতাংশ, লিব্রা ইনফিউশনের ৮.৩৪ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৮.১২ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্ন ডাইংয়ের ৭.৭৮ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ৭.৫৩ শতাংশ এবং আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৭.১৪ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।

সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে লিনডে বাংলাদেশ লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪.২৯ শতাংশ কমেছে। আর দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে কাট্টালী টেক্সটাইলের ২২.৩০ শতাংশ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের ১৮.৬০ শতাংশ, বে লিজিংয়ের ১৮.৪৮ শতাংশ, ওয়েস্টার্ন মেরিনের ১৭.৯৫ শতাংশ, ইন্দো বাংলা ফার্মার ১৭.৯২ শতাংশ, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ১৭.৭৫ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্সের ১৭.৩৯ শতাংশ, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৭.১২ শতাংশ এবং ফরচুন সুজ লিমিটেডের ১৬.৬৭ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

সপ্তাহজুড়ে শীর্ষ লেনদেনে ১০ কোম্পানি
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫.৪৮ শতাংশ। গ্রামীণফোন লিমিটেড সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৫.০২ শতাংশ। আর ব্রাক ব্যাংক পিএলসি। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকটির প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি এক লাখ ৯০ হাজার হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৯৯ শতাংশ। এছাড়া, প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, এমজেএল বাংলাদেশের ১৩ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইবনে সিনা ফার্মার ১৩ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, এডিএন টেলিকমের ৯ কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৮ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

বিনিয়োগ ঝুঁকি আরো কমেছে
বিনিয়োগ ঝুঁকি আরো কমেছে পুঁজিবাজারে। কারণ সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) আরো কমেছে। বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে ৩.৪৫ শতাংশ কমেছে। দেশের পুঁজিবাজারের শেয়ারদর এখন এমনিতেই তলানিতে অবস্থান করছে। যে কারণে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ শেয়ারই এখন বিনিয়োগের জন্য এমনিতেই ঝুঁকিমুক্ত। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ১০.৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১০.৭০ পয়েন্ট।
খাতভিত্তিক হিসাবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে ৬.৫ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ১২.৮ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ৯৪.৮ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১২.৬ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ৩৪.১ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৪.৬ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৩ পয়েন্ট, সাধারণ বীমা খাতে ১২.৪ পয়েন্ট, আইটি খাতে ১৬.২ পয়েন্ট, পাট খাতে ১৭.৪ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ২৯.৫ পয়েন্ট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১৪২.৫ পয়েন্ট, কাগজ খাতে ৩০.১ পয়েন্ট, ওষুধ খাতে ১২.৪ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ১৩.৯ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ১৯.২ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১২.২ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১২.৪ পয়েন্ট ও বস্ত্র খাতে ১৭.৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে (২২-২৬ সেপ্টেম্বর) খাতভিত্তিক পিই রেশিও ছিল- ব্যাংক খাতে ৬.৭ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ১৩.২০ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ১০১.৯ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১৩.৪ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ৩৬.১ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৫.২ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৭ পয়েন্ট, সাধারণ বীমা খাতে ১২.৮ পয়েন্ট, আইটি খাতে ১৬.৪ পয়েন্ট, পাট খাতে ১৮.৩ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ২৯.৮ পয়েন্ট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১৪৭.৪ পয়েন্ট, কাগজ খাতে ৩২.৪ পয়েন্ট, ওষুধ খাতে ১২.৮ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ১৪.২ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ২১.৪ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১২.৯ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১২.৮ পয়েন্ট ও বস্ত্র খাতে ১৭.৭ পয়েন্ট।

চট্টগ্রামে গড়ে ৩ শ’র বেশি পয়েন্ট ঝরেছে
চট্টগ্রাম স্টকের সাপ্তাহিক তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিটি সূচক থেকে গড়ে তিন শ’ পয়েন্টের বেশি হারিয়েছে গেল সপ্তাহে। পয়েন্ট হারাতে হারাতে সূচকগুলো শুষ্ক হয়ে পড়ছে। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫২১.৪৪ পয়েন্ট বা ৩.৩০ শতাংশ হারিয়ে এখন ১৫ হাজার ২৭১.৭৭ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ২৯৬.২৯ পয়েন্ট বা ৩.০৯ শতাংশ হারিয়ে ৯ হাজার ২৭৫.০৩ পয়েন্টে এবং সিএসই-৩০ সূচক ৩৬৫.৮০ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১২ হাজার ৪৫৭.৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ২৫২টির বা ৮০.২৫ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির। গেল সপ্তাহটিতে ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫ টাকায় মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। এই বাজারে গেল সপ্তাহে বাজারমূলধন কমেছে ১২ হাজার ১১০ কোটি টাকা। সপ্তাহ শুরুতে বাজারমূলধন ছিল সাত লাখ ২০ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। যেখানে সপ্তাহ শেষে কমে এখন সাত লাখ ৮ হাজার ৪৪ কোটি টাকায় নেমেছে। বাজারমূলধনের অংশীদারিত্বে এ শ্রেণীর কোম্পানির শেয়ার শীর্ষে। এ শ্রেণীর অংশীদায়িত্ব ৭২.৮৫ শতাংশ, বি শ্রেণীর ২১.২০ শতাংশ, এন শ্রেণীর ২.৩২ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর ৩.৬২ শতাংশ।

রয়্যাল ক্যাপিটাল বাজার বিশ্লেষণ
রয়্যাল ক্যাপিটাল বাজার বিশ্লেষণে বলছে, গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার পুরো বিক্রির চাপে ছিল। ৫৯ শতাংশ বিক্রেতা থাকলেও বিক্রির চাপ ছিল ৭০ শতাংশ। আর ৩১ শতাংশ ক্রেতা থাকলেও কেনার চাপ ছিল ৩০ শতাংশ। ক্রেতা না থাকায় হতাশ বিক্রেতারা। বেশি বিক্রির চাপে ছিল ব্যাংকিং খাতের শেয়ারগুলো। এছাড়া টেলিকম, ফার্মা, প্রকৌশল, জ্বালানি ও খাদ্য খাতের শেয়ারগুলোও কম বিক্রির চাপে ছিল। বাজারমূলধনে অংশীদারিত্ব জেড শ্রেণীর কোম্পানির শেয়ারের আধিপত্য বেড়েছে। ০.১৮ শতাংশ বেড়ে গেল সপ্তাহে হয়েছে ৩.৪ শতাংশ। অন্যদের কমেছে। এ শ্রেণীর ৮৭.৪ শতাংশ, বি শ্রেণীর ৮.১ শতাংশ, এন শ্রেণীর ০.৯ শতাংশে এসেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement