০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`

৩০ পৌরবাসী সুপেয় পানি পাচ্ছেন ডিসেম্বরেই

৩০ পৌরবাসী সুপেয় পানি পাচ্ছেন ডিসেম্বরেই -


আগামী ডিসেম্বরেই চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও চন্দনাইশসহ দেশের ৩০ পৌরবাসী সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছেন। দুই দেশের যৌথ অর্থায়নে ১৭৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভায় শঙ্খনদী থেকে পাম্পের মাধ্যমে অপরিশোধিত পানি দীর্ঘ পাইপলাইন দিয়ে প্রথমে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নেয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে পানিকে বিশুদ্ধ করে পৌরসদরে বিশালাকারের রিজার্ভারে ধারণ করে তা গ্রাহকের মধ্যে সার্ভিস পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২ অক্টোবর পর্যন্ত চন্দনাইশ পৌরসভায় নির্মাণাধীন পানি সরবরাহ স্যানিটেশন প্রকল্পের কাজ ৯০ ভাগের বেশি সম্পন্ন হয়েছে।

চলতি বছরের মধ্যেই চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও চন্দনাইশসহ দেশের ৩০ পৌরসভার অধিকাংশ পৌরবাসীই এ সুফলের আওতায় আসছেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তা ছাড়া প্রকল্প মেয়াদের মধ্যে সব পৌরসভায় প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনানুসারে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশা করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীগণ। অপর দিকে বাঁশখালী পৌরসভায় গভীর নলকূপের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করে দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি ওভারহেড ট্যাংকিতে রাখা হবে। এরই মধ্যে এর সব কাজই সম্পন্ন হয়েছে। সেখান থেকে গ্রাহকদের সার্ভিস পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যদিও বাঁশখালী পৌরসভার ওই প্রকল্পে প্রথমে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে পরিশোধন করার কথা ছিল। কিন্তু ভূগর্ভের পানির স্তর না পাওয়ায় বর্তমানে গভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করে তার নির্মাণাধীন জলাধারের সংরক্ষণ করে সরবরাহ করা হবে। জানা গেছে, ইতোমধ্যে বাঁশখালী পৌর এলাকায় কাজের অগ্রগতি ১০০ ভাগ ছাড়িয়েছে।

জানা গেছে, সরকার সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুচ্ছ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের ৩০টি পৌরসভার নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি সুবিধা প্রদানের জন্য পৌরসভাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপনের জন্য ১৭৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল জুলাই ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এ প্রকল্প শুরুই হয় অনেক দেরিতে। পরে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ওই প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও চন্দনাইশ পৌরসভা ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, রাজশাহীর কাটাখালী তাহেরপুর ও বাঘা, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও বনপাড়া, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও পাঁচবিবি, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, যশোহরের চৌগাছা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও কমলগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী, ভুয়াপুর ও মধুপুর, জামালপুরের ইসলামপুর, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ও উল্লাহপাড়া, কুমিল্লার হোমনা ও দেবীদ্বার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, ফেনীর পরশুরাম, নোয়াখালীর সেনবাগ, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, বগুড়ার শিবগঞ্জ ও কাহালু, নারায়ণগঞ্জের তারাবো, মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভাতে নিরাপদ পানি (সুপেয় পানি) সরবরাহ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। এর পরই শুরু হবে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর খুব দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ায় দেশব্যাপী সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়। বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর গৃহীত দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও বাঁশখালী পৌরসভাসহ ১৯ জেলায় একযোগে ৩০ পৌরসভায় সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে।
গতকাল বিকেলে যোগাযোগ করা হলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবু পলাশ চন্দ্র দাশ বলেন, চট্টগ্রামের দুটো পৌরসভায় প্রথম পর্যায়ে নিরাপদ পানি সরবরাহ করার কাজ বেশ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চন্দনাইশ ও বাঁশখালী পৌরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement