স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী মালিকরা পোশাকশিল্প অস্থির করছে : রিজভী

পোশাকশিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী মালিকদের পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে গত কয়েকদিনের আশুলিয়ায় গার্মেন্টসে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার অত্যন্ত সুবিধাভোগী গার্মেন্টস মালিকদের লোকরা অন্যান্য যে গার্মেন্টস আছে যারা নিরপেক্ষ অথবা বিএনপির সমর্থিত লোকজনের গার্মেন্টসে এসে তারা হামলা করেছে। কে নজরুল ইসলাম? কে সালাম মোর্শেদী? এরা কি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী নয়? এরা আওয়ামী লীগের এমপি ছিল না? এদের গার্মেন্টস থেকে কৃত্রিমভাবে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। যাতে ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যায়, এটা যেন টিকে থাকতে না পারে। এই ধরনের ষড়যন্ত্র ওরা করছে।
রিজভী বলেন, এটা শুধু গার্মেন্টসে নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামেও হয়েছে। একটা তুচ্ছ ঘটনাকে নিয়ে সেখানে একটা বড় ঘটনা ঘটানো হলো। প্রকৃত স্বৈরাচারের দুষ্টচক্র প্রশাসক থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জায়গায় তারা সুতার টান দিচ্ছে এবং একটার পর একটা ঘটনা তারা এখানে ঘটাচ্ছে।
‘ইউপি এখনো বাতিল করছে না কেন’

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ পুরো দেশকে ভয়ঙ্কর নিপীড়নের জনপদে পরিণত করেছিল। আওয়ামী লীগের এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-পৌরসভার চেয়ারম্যানরা এসব করেছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সবাই সমর্থন করেছে। এরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফসল।
তিনি বলেন, যারা এই ধরনের নিপীড়নের একেকটা কেন্দ্র তৈরি করেছিল, হিংস্র কুকুর দিয়ে যারা কামড় দেয়াতো তাদের অংশ এখনো রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করছে না কেন? এরা তো সেই আওয়ামী লীগের গুণ্ডাপাণ্ডা-সন্ত্রাসী তারা কত হিংস্র-বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি উপদেষ্টা পরিষদকে বলতে চাই, আপনাদের ভয় কিসের? কে আপনাদেরকে নিষেধ করেছে, কারা আপনাদেরকে নিষেধ করছে যে, এটা করা যাবে না। এটা (ইউপি) রাখাতো হাসিনার দ্বারা যারা যারা নিপীড়িত, হাসিনার দ্বারা যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্তের প্রতি অবমাননা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে শেখ হাসিনার অনুচরেরা। শুধু অপেক্ষা করছে শেখ হাসিনার জন্য। নানাভাবে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, প্রশাসনকে ও গণতান্ত্রিক শক্তির কাজকর্ম ব্যাহত করার জন্য গোপনে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে।
রিজভী বলেন, আমরা ১৬/১৭ বছর লড়াই করেছি। কোনো চক্রান্তকারী চক্রান্ত করে, তাদের প্রভুদের কাছ থেকে মদদ নিয়েও আর কিছু করতে পারবে না। জনগণের শক্তি সর্বোচ্চ শক্তি। এটা ভুলে গিয়েছিল শেখ হাসিনা। এই কারণে জনগণের ভোট নেয়ার চেয়ে সে নির্বাচন-ভোটের প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগকে দিয়ে র‌্যাব-পুলিশকে শক্তিশালী করেছিল। তার ভোটের দরকার ছিল না। সে বলেছিল আমার ভোটের দরকার নাই, তুই কত গুলি করতে পারিস বিএনপির নেতাকর্মীকে, সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে এর ওপর তোর প্রমোশন হবে, এর বিনিময় তোরা যত লুট করতে পারিস লুট করবি, কেউ বাধা দেবে না।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শেখ রবিউল ইসলাম রবির আর্থিক সহযোগিতায় ছাত্র-জনতা বিপ্লবের সময়ে ঢাকা-১০ আসনের আহত রিকশাচালক সাইদুল ইসলামকে একটি ব্যাটারিচালিত নতুন অটোরিকশার চাবি ও কাগজপত্র তুলে দেন রিজভী।