০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

১০ বছর ঘুরেও মামলা করতে পারেননি ইয়ামিন

-

ন্যায়বিচার তো দূরের কথা, প্রায় ১০ বছর ঘুরেও মামলাই দায়ের করতে পারেননি ইয়ামিন চৌধুরী। থানায় গিয়ে মামলা করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। প্রশাসন, সরকারের কর্তাব্যক্তি এবং রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের করতে পারেননি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সর্বশেষ গত সোমবার আবারো গিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেছেন, এমন পুরনো মামলা তারা নিতে পারবেন না।
ভুক্তভোগী ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, তার ওপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনার নায়ক মনিরুজ্জামান ওরফে সুন্দর মনির ওরফে মাউরা মনিরের নেটওয়ার্ক এতটাই শক্তিশালী যে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তার সাম্রাজ্য ঠিকই টিকে আছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এখনো মনিরের নির্দেশেই কাজ করছে।

ইয়ামিন চৌধুরীর বাড়ি সাভারের আমিন বাজারের বেগুনবাড়ির হিজলা গ্রামে। তিনি জানান, মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের ইট-বালুর ঘাটে ব্যবসা করতেন। মনিরের লোকজন ওই ঘাটে নিয়মিত চাঁদাবাজি করত, দিতে না চাইলে তাদের ওপর নির্যাতন চালাত। ২০১৪ সালে ওই ঘাটে একদিন তাকেও মারধর করে মনিরের লোকজন। এর প্রতিবাদ করেন তিনি। পরে ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ওই ঘাট থেকে তাকে একটি গাড়িতে তুলে অপরহণ করা হয়। হাত-পা, মুখ বেঁধে গাড়ির ব্যাক বনেটে করে নেয়া হয় আদাবর পিসি কালচার হাউজিংয়ের ১নং রোডের ২নং বাড়িতে। ওই বাড়িটি মনিরের। ওই বাড়ি থেকে মনিরের মা সাবিহা বেগম ইয়ামিনকে নিয়ে হাজী দিল মোহাম্মদ এভিনিউস্থ সি ব্লকের ৪৯ নম্বরে মনিরের বাগান বাড়িতে যায়। সেখানে হুমায়উন ওরফে শুটার হুমায়উন, সাহাবুদ্দিন, আনোয়ার উল্লাহ ওরফে আনোয়ার মাসুদ, সেলিম ওরফে আদম বেপারী সেলিম, সুলতান ওরফে ডাকাত সুলতান এবং মিজান ওরফে সুইপার মিজান একটি গর্তের মধ্যে ফেলে ইয়ামিনকে বেদম মারধর করে। একপর্যায়ে গর্তের মধ্যে তার ওপর বরফ ঢেলে দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে রাতের কোনো এক সময় ওই গর্ত থেকে উঠে পালাতে সক্ষম হন ইয়ামিন।

তিনি জানান, ঘটনার পর থানায় গিয়েছিলেন মামলা দায়েরের জন্য। কিন্তু মনিরসহ অন্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হওয়ায় সে সময় ইয়ামিনকে থানা থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর তিনি আদালতে যান মামলা দায়েরের জন্য। কিন্তু সেখানেও মামলা দায়ের করতে পারেননি। এ নিয়ে তিনি অনেকের কাছেই গিয়েছেন, কিন্তু একটি মামলা পর্যন্ত দায়ের করতে পারেননি। সর্বশেষ তিনি গত সোমবার আবারো মোহাম্মদপুর থানায় গিয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা বলেছে, অত পুরনো ঘটনায় এখন মামলা নেয়া যাবে না। তবে গতকাল থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে এলে মামলা নেয়া হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গোটা মোহাম্মদপুরের আতঙ্ক হচ্ছে এই মনির। অতীতে র‌্যাব-পুলিশ কয়েকবার তাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু গ্রেফতার হলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অনেকেই তাকে ছাড়ার জন্য ফোন দিতেন। তার বিরুদ্ধে এলাকার সরকারি-ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দখল, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও মনিরের সাম্রাজ্য এখনো অক্ষত। তার ভয়ে এখনো এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পান না।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি কারাগারে কেমন আছেন ‘ভিআইপি’ বন্দীরা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান সংস্কারের পরই নির্বাচনী রোডম্যাপ নির্ধারণ হবে এমডির সহযোগিতায় ৭৫ কোটি টাকা লোপাট : পর্ষদ ভেঙে দেয়ার দাবি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার পানি কমলেও বাড়ছে ভাঙন রেমিট্যান্সে সেপ্টেম্বরে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি ৮০.২১ শতাংশ ‘ন্যায্যতাই’ কেবল বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টেকসই করবে বিক্ষোভকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউনে জড়িতদের জবাবদিহি করতে হবে : মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর

সকল