মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৬
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা সব মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।
গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধন থেকে তার মুক্তির জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে আইন উপদেষ্টা নিজে উদ্যোগ নিয়ে মাহমুদুর রহমানের মুক্তির ব্যবস্থা না করলে তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, মাহমুদুর রহমান প্রথম ব্যক্তি যিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে নৈতিকতার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে, একজন সম্পাদক হিসেবে শাহবাগের ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। একটা সময়ে তিনি একাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। বলেছিলেন, শাহবাগে ফ্যাসিবাদের সূচনা হচ্ছে। যার কারণে ফ্যাসিবাদের দোসররা তার বিরুদ্ধে প্রতিটি জেলায় জেলায় মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এরপর তাকে গ্রেফতার করে টানা ৩৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করেছে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে শরীফ ইসলাম বলেন, আমরা আলটিমেটাম দিচ্ছি, যেসব সন্ত্রাসী কুষ্টিয়ায় মাহমুদুর রহমানের ওপরে হামলা করেছিল দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে হবে। যে পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট লিখে পদোন্নতি পেয়েছিলেন তাকেও গ্রেফতার করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আইন উপদেষ্টা নিজে উদ্যোগ নিয়ে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে যত অন্যায়, মিথ্যা, প্রহসনমূলক মামলা করা হয়েছে, সব মামলায় যেহেতু সরকার বাদি, সুতরাং অবিলম্বে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার মাহমুদুর রহমানের মামলা নিয়ে কী করবে তা যদি না জানায়, তাহলে আমরা আর রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়াব না। আমরা আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করব। প্রয়োজনে প্রতিটা মানুষ রক্তাক্ত হবো, তবু মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত না করে আমরা ঘরে ফিরব না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, মাহমুদুর রহমান ভাই অকুতোভয় নির্ভীক সৈনিক, যিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। যখনই তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লেখা শুরু করলেন, ঠিক তখনই তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের পক্ষ থেকে মামলা দেয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে তিনি কুষ্টিয়ার আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে তার ওপর হামলা করে স্বৈরাচারের দোসররা। সিএমএম কোর্ট চাইলে তার শাস্তি মওকুফ করতে পারতেন, কিন্তু সেটি না করে তার শাস্তি বহাল রাখেন। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।
আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী বলেন, মাহমুদুর রহমান সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিলেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে সাহস জুগিয়ে এসেছেন। স্বৈরাচারী সরকারের মদদে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাজধানীর সাতরাস্তা ও কুষ্টিয়ায় হামলা করা হয়েছিল। এ কারণে তাকে বাধ্য হয়ে দেশের বাইরে নির্বাসনে যেতে হয়। দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার পরে তিনি ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। মাহমুদুর রহমানকে যদি মুক্তি না দেয়া হয়, তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা হবে।
মানববন্ধনে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য ও ঢাবি শিক্ষার্থী ফাতিমা তাসনিম, সাংবাদিক আবদুল আনোয়ার ঠাকুর, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিক মুজাহিদ, ঢাবি শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।