ব্যাংকিং, রাজস্ব ও জ্বালানি খাতে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক : অর্থ উপদেষ্টা
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৯
ব্যাংকিং, রাজস্ব ও জ্বালানি খাত সংস্কারসহ আর্থিক উন্নয়ন এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক ও তার সহযোগিতা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) সহায়তা করবে। এই সহায়তা পরিমাণ কত তা পরে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, মোট কথা তারা আমাদের সব বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তবে আমাদের কিছু কাজ করতে হবে, কিছু শর্ত আছে সেগুলো আমাদের পালন করতে হবে।
গতকাল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্বব্যাংক এবং আইএফসির প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, আজকে বিশ্বব্যাংক এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। বিশ্বব্যাংক কি কি কাজে সহায়তা দিবে এর আগে আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তারা আমাদের অর্থনৈতিক খাত ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কারের বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে।
আইএফসির বিনিয়োগ নিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, তারা কীভাবে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করবে এসব বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। তারা কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আগামী অক্টোবরে আমি যখন তাদের সভায় যাব, তখন এসব বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা হবে।
কোন কোন খাতে তারা সহায়তা দেবে সে বিষয়ে কি কিছু জানিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা তো আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে। ব্যাংকিং খাত ও এনবিআর সংস্কারের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া এনার্জি খাতেও কিছু আছে। সার্বিকভাবে আমাদের আর্থিক উন্নয়ন এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে তারা সহায়তা করবে।
কী পরিমাণ সহায়তা দেবে সে বিষয়ে কি কিছু জানিয়েছেন; উপদেষ্টা বলেন, অ্যামাউন্টের বিষয়ে এখন আমি বলব না। প্রত্যেকটা ডোনার ও অন্যান্য ডোনার কি দেবে সেটুকু জেনে সবটুকু নিয়ে পরে আপনাদের জানানো হবে। যথাসময় জানাব, কোনো ডোনার কি দিয়েছে, তবে এখন না।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, স্থানীয় সম্পদকে যতটা সম্ভব ব্যবহার করবে সরকার। তবে কিছু ক্ষেত্রে বৈদেশিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষার মতো কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আইএমএফের মতো বাহ্যিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রয়োজন। রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কারেও সহায়তার প্রয়োজন।’
বৈঠকে সরকার বিশ্বব্যাংক, রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক ও আইএফসিকে জানিয়েছে। সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এটি কোনো কারিগরি টিম ছিল না, তবে আমরা আমাদের বিস্তৃত উদ্দেশ্য এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেছি।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে, যদিও এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে।
তিনি আরো বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের সমস্যা, ব্যাংকিং সংস্কার এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের পরিকল্পনা করছে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। তারা কর সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথেও সম্পৃক্ত থাকবে।
এ সময় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রার্সেস, ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট ও কম্পিটিটিভনেসের গ্লোবাল ডিরেক্টর মোনা হাদ্দাদ, বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক এবং অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন, প্র্যাকটিস ম্যানেজার গাবি জর্জ আফ্রাম, সমৃদ্ধি অনুশীলন গ্রুপের প্রোগ্রাম লিডার সোলাইমানে কুলিবালি, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইমাদ ফাখৌরি, প্রধান ঝুঁকি কর্মকর্তা বিবেক পাঠক, বাংলাদেশের সিনিয়র কান্ট্রি অফিসার কাজী ফারহান জহির, ম্যানেজার ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর উইলফ্রেড টেমেগনন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।