৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

আগস্টে বিএসএমএমইউ চিকিৎসকদের নির্যাতনের মুখে আন্দোলনকারী ছাত্ররা

প্রকাশ্যে ভিডিও
-

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলনকারী এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করা ভিডিও এবার প্রকাশ্যে এলো। আন্দোলনকারী ছাত্রটিকে পিটিয়ে আহত করলেও হাসপাতালে এতো চিকিৎসক থাকতেও তাকে সাহায্য করতে কেউ আসেনি এবং চিকিৎসার সব ব্যবস্থা থাকলেও কেউ ছাত্রটির চিকিৎসা দেয়নি। অথচ একজন চিকিৎসক দলমত নির্বিশেষে সবাইকে চিকিৎসা দেয়ার শপথ নিয়েই চিকিৎসক সনদ পেয়ে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ভিডিওটি তাদের হাতে এসেছে। নির্যাতনের ওই ভিডিও পুলিশের কাছেও গেছে এবং পুলিশ গাজীপুর থেকে ডা: হাসানুল হক নিপুণ নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা: মো: নজরুল ইসলাম জানান, ‘তদন্ত কমিটিকে তদন্ত দ্রুত শেষ করে রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালটির কেবিন ব্লকের সামনে একজন আন্দোলনকারীকে নির্দয়ভাবে গজারী কাঠের লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে অ্যাপ্রন পরা ও অ্যাপ্রন ছাড়া চিকিৎসকরা। এ সময় হেলমেট পরা অবস্থায়ও ছিলেন কয়েকজন ডাক্তার। আন্দোলনকারী ছাত্রটি এসব চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্যাতনে অচেতন হয়ে গেলেও তাকে পেটানো বন্ধ হয়নি। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন মোড়ে ঠিক একই রকমভাবে সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ হত্যার মতো দৃশ্য দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, নির্যাতনকারীরা ৩০ জনের বেশি হবে। সবার হাতে ভারী লাঠি-সোটা। এদের সবাইকে দেখা গেছে, একজনকে টেনে-হিঁচড়ে পেটাচ্ছে।

মেডিক্যাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেট ও কেবিন ব্লকের সামনে খোলা জায়গায় পেটানোর ওই দৃশ্যটি ধারণ করা হয়। ভিডিওতে আন্দোলনকারী ছাত্রটিকে যেখানে পেটানো হয় সেখানে রোগী কল্যাণ সমিতির একটি সাইন বোর্ডও দেখা গেছে। এই সাইনবোর্ড হাসপাতালের ভেতরে ৩ নম্বর গেটের সামনের প্রবেশ মুখে। আন্দোলনকারী ছাত্রটিকে যারা পেটাচ্ছিল তাদের মধ্যে একজন নারীও ছিলেন। রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো: নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আশা করি তদন্তে সত্যটা বেরিয়ে আসবে, এ ব্যাপারে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।’ এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র চিকিৎসক ডা: মো: সাইফুল ইসলাম সেলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের কাজ দল-মত নির্বিশেষ সবার চিকিৎসা দেয়া, নির্যাতন করা নয়। আশা করি, তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’
এ ব্যাপারে কমিটির সদস্য সচিব ডা: শেখ ফরহাদ জানান, ‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে নির্যাতনে জড়িত বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, বাকিদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হবে। আশা করছি, এ সপ্তাহের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে পারব এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করতে পারব।’ তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা: মো: মোজাম্মেল হক, সদস্য সচিব ছাড়া অন্যরা হলেন, অধ্যাপক মো: আহমদ আবু সালেহ, অধ্যাপক মোহাম্মদ সফি উদ্দিন। সদস্য সচিব ছাড়া সভাপতিসহ তিনজন তিন অনুষদের ডিন।

 


আরো সংবাদ



premium cement