২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

স্বৈরাচারের উচ্ছিষ্ট প্রশাসনে বসে ষড়যন্ত্র করছে : তারেক রহমান

ঝিনাইদহে বিএনপির সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান (ইনসেটে) : নয়া দিগন্ত -

হাসিনা সরকারের পতন হলেও সেই সময়ের লোকজনই এখনো প্রশাসনে বসে ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আর ছাত্র-জনতা আগস্টে সংগ্রাম করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র মুক্ত করেছে। তবে স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদের রেখে যাওয়া উচ্ছিষ্ট প্রশাসনে রয়ে গেছে। তাদের চলমান ষড়যন্ত্রের কাছে মাঝে মাঝে সরকার অসহায় বোধ করছে, তাদের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এই ছোট ছোট ষড়যন্ত্র এক সময় বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। সেজন্য সরকারকে সজাগ থাকতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে জেলা বিএনপির সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, অন্তর্র্বর্তী সরকারের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। সে দায়িত্ব তারা পালন করছে। তাদের ওপর আমাদের সমর্থন আছে। দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারে জনগণের নির্বাচিত সরকার। স্বৈরাচার পতনের এ মহাক্ষণে দেশের গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের অবদানকে যদি মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হই; স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার গুম-খুন, হামলা-মামলা, নির্যাতনের প্রতিবাদে জনগণের অবদানের স্বীকৃতি দিতে না পারি তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। শহীদদের স্বপ্ন আমাদের সফল করতে হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আজিজুল বারি হেলাল, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, শহিদুজ্জামান বেল্টু, মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ আমিরুজাজ্জামান খান শিমুল। এ দিকে এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহে জনতার ঢল নামে। বেলা ৩টার সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে ভিড় জমাতে থাকেন। দুপুর হতে না হতেই ঝিনাইদহ পায়রা চত্বরের সমাবেশ পরিণত হয় যেন মহাসমাবেশে। চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, হামদহ, আরাপপুর ও আরাপপুর থেকে পায়রা চত্বর পর্যন্ত জনতার ঢেউ আছড়ে পড়ে। শহরের চার পাশে যেদিকেই চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। জনতার বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে ঝিনাইদহ শহরের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ সমাবেশে জানান, ১৬ বছর পর বিএনপির এই সমাবেশ ঝিনাইদহ জেলাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। তিনি বলেন, খুন গুমের রানী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে বিএনপি ঝিনাইদহে বড় কোনো সমাবেশ করতে পারেনি। সমাবেশ করতে গেলেই পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে পণ্ড করে দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের সমাবেশ থেকে গ্রেফতার করে জেলে ঢোকানো হয়েছে। দুঃশাসনের প্রতিবাদ করে প্রায় ৩০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। ১১ হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছে। অনেকেই হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে পিষ্ট হয়ে সম্পদ ও সংসার হারিয়েছেন। তাই মুক্ত পরিবেশে এই সমাবেশ বিএনপির জন্য একটি উজ্জীবনী বার্তা ও নতুন করে লড়াই-সংগ্রাম করার প্রেরণা জোগাবে বলে বিএনপি সভাপতি মনে করেন।
সমাবেশে বেলা আড়াইটার দিকে মঞ্চে দেশের আলোচিত সঙ্গীতশিল্পী মৌসুমি ‘দেশটা তুমার বাপের নাকি করছ ছলাকলা’ গানটি পরিবেশন করেন। এ সময় সমাবেশে আগত দলীয় নেতাকর্মীরা করতালি আর মুর্হুমুহু স্লোগান তুলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement