২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
প্রশাসন-ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্যাসিবাদীদের সরাতে হবে : ডা. তাহের

জাকাতভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় জামায়াত : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা উত্তরের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের : নয়া দিগন্ত -


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, জনগণ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীর হাতে দিলে, যাকাতভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সুদ কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, যাকাতভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম কর্মসূচি।
গতকাল রাজধানীর মগবাজারস্থ আলফালাহ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত মজলিসে শূরার সাধারণ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মো: শামসুর রহমান, অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, ড. মোবারক হোসাইন প্রমুখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে পারলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদদের রক্তের মূল্যায়ন হবে। সেই সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে যারাই যখন ক্ষমতায় এসেছে এবং ক্ষমতায় ছিল তাঁরাই দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। কেউ কেউ বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর দু’জন মন্ত্রী তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। তারা এক পয়সা দুর্নীতি করেছে বলে আজ পর্যন্ত কেউ অভিযোগও করতে পারেনি। এমনকি যতজন এমপি দায়িত্ব পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধেও কেউ দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা এক আল্লাহকে ভয় করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের সম্পদ মনে করে এবং বিশ্বাস করে। সেজন্য জামায়াতের কর্মীরা জনগণের সম্পদ লুট করে না এবং করবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৭১ সালে সব শ্রেণী পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছে। তবে দেশ স্বাধীন হলেও স্বাধীনতার স্বপ্ন পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। অতীতের কোনো সরকার গণতন্ত্রের চর্চা করেনি। বরং ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ হবে জনগণের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেজন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তব্যে মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং মৌলক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী যে সংগ্রাম চালিয়ে আসছে তা চূড়ান্তরূপ নেয়া পর্যন্ত সব স্তরের নেতাকর্মীদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল এখনো অপপ্রচার চালাচ্ছে, অতীতের মতো জামায়াতে ইসলামী দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে সব অপপ্রচার রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

প্রশাসন থেকে ফ্যাসিবাদের পক্ষের লোকদের সরাতে হবে-ডা: তাহের : লাগামহীন দুর্নীতি, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার নির্লজ্জ ষড়যন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার কেড়ে নেয়ায় সব শ্রেণী ও পেশার মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেশে একটি সফল বিপ্লব ও ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে; তাই এ দেশের মানুষ নতুন করে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও চরিত্রহীন নেতৃত্ব মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি আরো বলেন, গণপ্রশাসনে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের প্রতিভূরা এখনো বহালতবিয়তে। তাদের অবিলম্বে সরিয়ে বঞ্চিতদের পদায়ন করতে হবে। একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আগের লোকদের স্বার্থ রক্ষা করছেন। তিনি নিজেও দুর্নীতিতে জড়ানোর চেষ্টা করছেন। অবিলম্বে তাকে না সরালে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ইসলামী ব্যাংকে তাদের মূল মালিকদের কাছে ফেরত দিতে হবে। অর্থ উপদেষ্টাকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ডা: তাহের বলেন, যে পাঠ্য বইয়ে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে, তা আর একদিনও থাকতে পারে না। দ্রুত এটি সরিয়ে ফেলতে হবে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কারের রোডম্যাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কি কি সংস্কার করতে চান সেটি আগেই জাতিকে জানান। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য চাই। ভোটের সংখ্যার অনুপাতে সংসদ সদস্যের সংখ্যা নির্ধারণ করার দাবি জানাই। এ ব্যাপারে আমাদের ওয়ার্ক করা আছে। আমাকে দায়িত্ব দিলে দেড় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব ইনশাআল্লাহ।

গতকাল রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেকদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব। দারসুল কুরআন পেশ করেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সামাদ। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা: ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসাইন, ইয়াছিন আরাফাত, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও জামাল উদ্দীন এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, অপশাসন-দুঃশাসন, গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সকল সময়ের সীমালঙ্ঘন করায় ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম এক অভিনব আঙ্গিকে একটি সফল ও স্বার্থক আন্দোলন করেছে। তাদের ডাকেই সাড়া দিয়েছে রাজপথে নেমে এসেছিল আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। এই আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিল জামায়াতে ইসলামী। তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের দ্বীনের বিজয়ের জন্য শপথবদ্ধ হতে হবে : অধ্যক্ষ নুরুল আমিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবনে কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। ইসলামের ব্যাপক জ্ঞানার্জন এবং বাস্তব চরিত্রে আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। নিজেদেরকে ইসলামের মূর্তপ্রতীক হতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের দ্বীনের বিজয়ের জন্য শপথবদ্ধ হতে হবে। তিনি আরো বলেন, ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইপিজেড থানার ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড শাখার উদ্যোগে কর্মী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড আমির মুহাম্মদ ওসমান গণির সভাপতিত্বে শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহানগরী জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ ও পতেঙ্গা থানা আমির এবং চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসাইন ও ইপিজেড থানা আমির আবুল মোকাররম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল আরিফ, আব্দুর রহিম বিশ্বাস প্রমুখ।

পতেঙ্গা থানা জামায়াতের কর্মী শিক্ষা বৈঠক
জামায়াতে ইসলামী পতেঙ্গা থানার দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড শাখার এক কর্মী শিক্ষা বৈঠক ওয়ার্ড সেক্রেটারি মুহাম্মদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। এতে দারসুল কুরআন পেশ করেন পতেঙ্গা থানা আমির এবং চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসাইন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা সালেহ আহমদ প্রমুখ। জামায়াতে ইসলামী পতেঙ্গা থানা শাখার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড শাখা এক কর্মী শিক্ষা বৈঠক ওয়ার্ড সভাপতি ডা: মাহাবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মী শিক্ষা বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ। এতে দারসুল কুরআন পেশ করেন জামায়াত নেতা মাওলানা বেলাল হাছন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ এমরান ও বাহার উদ্দিন প্রমুখ।

পাঁচলাইশ থানা জামায়াতের কর্মী শিক্ষা বৈঠক
পাঁচলাইশ থানা জামায়াতের ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড রৌফাবাদ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের উদ্যোগে এক কর্মী শিক্ষা বৈঠক ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদের সভাপতিত্বে ওয়ার্ড সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হাসান আলীর সঞ্চালনায় পাহাড়িকা আবাসিকে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পাঁচলাইশ থানা জামায়াতের আমির মাহবুবুল হাসান রুমি।

৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের সাধারণ সভা
বন্দর থানা জামায়াতের ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের এক সাধারণ সভা ওয়ার্ড সভাপতি জি এম কামারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, মহানগর কর্মপরিষদ ও মজলিসে শূরার সদস্য এবং বন্দর থানা আমির মাহমুদুল আলম। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, বন্দর থানা জামায়াতের নায়েবে আমির আহছান উল্লাহ ও থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইকবাল শরিফ ও ওয়ার্ড আমির জাকের হোসেন প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement