২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ছেলের হাতে বাবা ও ভাতিজার হাতে চাচাসহ পৃথক ঘটনায় ৪ জন খুন

-


ঢাকার ধামরাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া এবং সিলেটের গোলাপগঞ্জে ছেলের হাতে বাবা, ভাতিজার হাতে চাচা, সহপাঠীদের হাতে স্কুলছাত্র এবং ধামরাইয়ে চটপটি খাওয়া নিয়ে তর্কবিতর্কে চারজন খুন হয়েছেন।

ধামরাইয়ে চটপটি খাওয়া নিয়ে খুন
ধামরাই (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, ঢাকার ধামরাইয়ে চটপটি খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের চড় থাপ্পড়ে মাহবুবুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে এলাকবাসী আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
গতকাল রাত সাড়ে ৮ দিকে ধামরাই পৌরসভার আইঙ্গন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাহবুব ধামরাই ইউনিয়নের স্বর্ণখালী এলাকার বারেক ব্যাপারির ছেলে। গ্রেফতার হওয়ায় বজলু ধামরাই পৌরসভার আইঙ্গন এলাকার মৃত জুলমত আলীর ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চটপটি খাওয়া নিয়ে মাহবুবুর রহমান ও বজলুর মধ্যকার তর্কবিতর্কের জেরে মারামারি বাধে দুইজনের মধ্যে। একপর্যায়ে বজলু স্বজোরে মাহবুবকে থাপ্পড় মাড়লে সে মাটি লুটিয়ে পড়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদি হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

ভোলাহাটে ঝগড়া থামাতে গিয়ে চাচা খুন
ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ঝগড়া চলছিল বাবা-ছেলের মধ্যে। এ সময় ঝগড়া থামাতে আসেন চাচা। তখন ভাতিজা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চাচার ওপর। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে চাচার পেটে আঘাত করেন ভাতিজা। এতে প্রাণ হারান চাচা।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় সদর ইউনিয়নের ঝাউবোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত চাচা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ঈসমাইল হোসেন দুলু (৬৫)। সে ঝাউবোনা গ্রামের মৃত সামার ছেলে এবং ভাতিজা রবিউল ইসলাম ভুট্টু (২৫) একই গ্রামের মিলন আলীর ছেলে। তারা সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা। রাত ১১টায় ঝাউবোনা গ্রামের মিলন আলীর সাথে তার ছেলে রবিউল ইসলাম ভুট্টু ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় চাচা থামাতে গেলে ভাতিজা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন ঈসমাইল হোসেন দুলুকে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেন মৃত্য ঘোষণা করেন।

সহপাঠীদের মারধরে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, পিরাজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় মোবাইল ফোন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের হামলায় শাওন খান (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃতু্যু হয়েছে। নিহত স্কুলছাত্র শাওন উপজেলার তেলিখালী গ্রামের শাহিন খানের ছেলে ও তেলিখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
গত ভোরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শুক্রবার ভাণ্ডারিয়ায় নেয়া হয়।
জানা গেছে, গত ১ জুলাই শাওন একটি মোবাইল নিয়ে স্কুলে যায়। মোবাইলটি তার সহপাঠী সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের ছেলে শাহেদ চুরি করেছে বলে শ্রেণী শিক্ষক আবুল হোসেনের কাছে সে অভিযোগ করে। ওই শিক্ষক মোবাইল চুরির অভিযোগে শাহেদকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ নিয়ে শাহেদ ও শাওনের সাথে বিরোধ হয়। ওই বিরোধের জেরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শাহেদ তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে শাওনকে আটকে বেদম মারধর করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

গোলাপগঞ্জে ছেলের হামলায় বাবা খুন
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, সিলেটের গোলাপগঞ্জে পাওনা টাকা কেন্দ্র করে ছেলের হাতে বাবা কামরান উদ্দিন (৬০) খুন হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকালে উপজেলার গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সরস্বতী গ্রামে নিহতের নিজ বাড়িতে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং নিহতের ছেলে রাজু মিয়া ও তার পুত্রবধূ আলফিনা বেগমকে আটক করেছে। কামরান উদ্দিন উপজেলার সরস্বতী গ্রামের মৃত ছবির উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
জানা যায়, কামরান উদ্দিনের কাছে নিজ ছেলে রাজু আহমদ পাওনা টাকা চায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাবা-ছেলের সাথে কথা কাটাকাটি, একপর্যায়ে কিল ঘুষি লাথির ঘটনা ঘটে। এ সময় ছেলের বউ আলফিনা বেগম শ্বশুরের ওপর হামলা চালায়। দীর্ঘক্ষণ ছেলে ও ছেলের বউসহ অন্যান্যরা কামরান উদ্দিনের ওপর হামলা চালালে একপর্যায়ে ছেলের হামলায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement