২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ময়মনসিংহে মূর্তি ভাঙচুরের সময় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আটক

-

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গোবিন্দ জিউর মন্দিরের নির্মাণাধীন দুর্গাপূজার মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক কিশোরকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। বুধবার ভোররাতে গৌরীপুর পৌর শহরের গোবিন্দ জিউর মন্দিরে এ ঘটনা ঘটেছে। আটক কিশোরের নাম ইয়ামিয়া (১৭), বাওই মন্দির থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। সে গৌরীপুর ইউনিয়নের গজন্দর গ্রামের মো: আব্দুল হান্নানের ছেলে। আব্দুল হান্নানও মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া গৌরীপুর উপজেলা জামায়েতের আমির মাওলানা বদরুজ্জামান মন্দির পরিদর্শন শেষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
স্থানীয়রা জানান, গৌরীপুর মধ্যবাজার পূজা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর মধ্যবাজারে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। এসব পূজামণ্ডপের মূর্তি বানানো হয় উপজেলা কৃষি অফিস সংলগ্ন গোবিন্দ জিউর মন্দিরে। গত ২০ দিন ধরে মন্দিরটিতে মূর্তি বানানোর কাজ চলছিল। এখন শুধু মূর্তির রঙ করা ও সাজশয্যা বাকি রয়েছে। পূজা শুরুর একদিন আগে মন্দির থেকে মণ্ডপে মূর্তি নেয়ার কথা ছিল।
গোবিন্দ জিউর মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন এস জানান, সেখানে দুর্গাপূজায় বিভিন্ন মণ্ডপের জন্য মূর্তি তৈরির কাজ করছেন মৃৎশিল্পীরা। প্রায় সব মূর্তি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন শুধু রঙের কারুকাজ বাকি রয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার দিনগত রাতে শহরের মধ্যবাজার পূজামণ্ডপে মূর্তি ভাঙচুর করে ইয়ানামের এক কিশোর। তিনি জানান, আটক ওই দিন ইয়াসিনকে সন্ধ্যা থেকেই মন্দিরের আশপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন অনেকেই। রাতে মন্দিরের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ থাকায় সে পেছনের ছোট একটি গেট দিয়ে ভেতরে ঢোকে এবং মূর্তি ভাঙচুর করে।
মধ্যবাজার পূজা কমিটির সাবেক সভাপতি পীযুষ রায় গণেশ সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার ভোররাতে এক যুবক মন্দিরের তিনটি মূর্তির মাথা, কয়েকটি মূর্তির শরীরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলে। ভাঙচুর শেষে একটি কালিমূর্তি কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে মন্দিরের পাশের বাড়ির ডলি রানী কাঁধে করে মূর্তি নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে চিৎকার শুরু করেন। ওই সময় প্রতিবেশী গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বশর্মা ও ডলি রানীর ছেলে প্রত্যয় দাস এসে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শী ডলি রানী জানান, প্রকৃতির ডাকে তিনি ঘরের বাইরে বের হয়ে দেখতে পান এক কিশোর নির্মাণাধীন দুর্গা মূর্তিগুলো ভাঙচুর করছে। তখন ডাকচিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ওই কিশোরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র বলেন, ইয়াসিন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তার নামে সমাজসেবা অধিদফতরের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন সেই প্রতিবন্ধী কার্ড তাদের দেখিয়েছেন। ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছি।
এ সময় উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বলেন, ইয়াসিনের বাবা মো: আব্দুল হান্নানও মানসিক ভারসাম্যহীন।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মাজহারুল আনোয়ার জানান, মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগে ইয়াসিনকে থানায় আনা হয়েছে। পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে নিয়মিত ভাতা দেয়া হয় তাকে। প্রাথমিক তদন্তে এ সংক্রান্ত একটি ভাতার কার্ড পেয়েছে পুলিশ।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহফুজ ইবনে আইয়ুব জানান, গজন্দর গ্রামের মো: আব্দুল হান্নানের ছেলে মো: ইয়াসিন মিয়া জন্মের পর থেকেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের ২০১৭ সালের প্রতিবন্ধী জরিপে তালিকাভুক্ত হয়েছে। সে ২০২১ সাল থেকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসেবে ভাতা পাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা আরো গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র তুলে নিয়ে বেঁধে মারধর, মৃত ভেবে দুই ছাত্রদল নেতাকে ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা সাকিবের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না বিসিবি সার্চ কমিটি থেকে বুলবুলকে অব্যহতি শান্তির জন্য জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দুই বন্দর দিয়ে ৬১ টন ইলিশ গেল ভারতে রাষ্ট্র সংস্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সময়ের দাবি: সৈয়দ ফয়জুল করীম মোদির সাথে ট্রাম্পের সাক্ষাৎ কেন হলো না মিত্রদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, লেবাননে সর্বশক্তি দিয়ে হামলার নির্দেশ নেতানিয়াহুর গোলাপগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ হাবিপ্রবি থেকেই দ্রুত ভিসি নিয়োগের দাবিতে আবারো মানববন্ধন

সকল