২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নতুন সংবিধান তৈরিতে সবার অংশগ্রহণ ও সম্মতি নিশ্চিত করার দাবি

রাজধানীতে সংবিধানের নতুন আকাক্সক্ষা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা: নয়া দিগন্ত -

সর্বদলীয় অভিভাবক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান তৈরিতে সবার অংশগ্রহণ ও কনসেন্ট নিশ্চিত করার দাবি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রিটি ফর সার্ভিং হিউমেনেটি (উইশ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘ইনট্রোডাকশন অব পিপলস উইল ২০২৪ ও নতুন সংবিধানের আকাক্সক্ষা’ বিষয়ে এক গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি করা হয়।
উইশ প্রধান ছিদ্দিকুর রহমানের পরিচালনা ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কিনোট উপস্থাপন করেন লেখক ও বুদ্ধিজীবী রিফাত হাসান।
আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মাইমুল আহসান খান, শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্লেষক শাহ আলম, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক।
বুদ্ধিজীবী রিফাত হাসান বলেন, ‘অ্যাথিক্যাল অথরিটি হয়ে ওঠার ব্যর্থতার কারণে নতুন সংবিধানের দাবি করছি আমরা। বর্তমান সংবিধান যার নেতৃত্বে অ্যাডপ্ট হয়েছিল, সেই শেখ মুজিব নিজে এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এই সংবিধান তার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নাই। সর্বশেষ, ছাত্রদের ওপরে ২৪-এর যে জেনোসাইড হলো তার বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নাই এই সংবিধান। ফলে পুরোপুরি অ্যাথিক্যাল অথরিটি হারিয়েছে। এখন এই গণ-অভ্যুত্থান থেকে আমাদের হারানো রাষ্ট্রের মালিকানা রিক্লেইম করার অথরিটি তৈরি হয়েছে। এই মালিকানা রিক্লেইম করার জন্যই নতুন সংবিধান তৈরি দরকার। এরজন্য সর্বদলীয় অভিভাবক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান তৈরিতে সবার অংশগ্রহণ ও কনসেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান তার আইনশাস্ত্র পড়ানোর ব্যাপক দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞতার আলোকে ইনফর্মাল ভঙ্গীতে কথা বলেন। তিনি বর্তমান সংবিধানকে একটি অপ্রয়োজনীয়ভাবে ফুটনোট দিয়ে ভরা দলিল বলেন। এ ছাড়া তিনি এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার ডকট্রিনের সমালোচনা করেন। তিনি এটিতে ভারতীয় সংবিধানের খারাপ ধারাগুলো গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এই সংবিধান ব্যবহার করেই ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যা করেছেন। জনগণের আকাক্সক্ষা তুলে ধরতে হলে সংবিধান তাদেরকেই লিখে ফেলতে হবে। এটাকে যত জটিল বা কঠিন বলে দেখানো হয় মূলত তা নয়। তিনি সংবিধানকে একটা মূলনীতি বা সূত্রের দলিল বলে মতপ্রকাশ করেন। এটিকে অযথা বিভিন্ন আইন ও বিধানের সঙ্কলন বানানোর তিনি তীব্র সমালোচনা করেন।
ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, বর্তমান সংবিধান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটায়নি। সংবিধানের আমূল পরিবর্তন অনিবার্য। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সংবিধানের অপরিবর্তনশীল অনুচ্ছেদগুলো ফ্যাসিজম চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।
গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন, লেখক ও গবেষক মনওয়ার শামসী সাখাওয়াৎ, আমানুল্লাহ, উম্মে ফারহানা, সংবিধান ও আইন বিশ্লেষক আরিফ খান, শিক্ষক ও গবেষক ড. সালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার, নাফিজ আহমদ, সরওয়ার ওদুদ চৌধুরী, ফজলুল করিম, কথাসাহিত্যিক ও ফারুক আব্দুল্লাহ, নাশাদ মযুখ, সৌরভ মাহমুদ ও আব্দুল মুকিম প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement