২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ভেঙে পড়া অর্থনীতি সচল করতে প্রস্তুত জামায়াত : ডা: তাহের

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত ব্যবসায়ীদের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ডা: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের: নয়া দিগন্ত -

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে দেশে বেকারত্ব দূর ও যুবসমাজকে ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করবে। দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করতে জামায়াতে ইসলামী এ দেশে সুদমুক্ত ইসলামী ব্যাংকিংব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। দেশ সেরা ইসলামী ব্যাংক অল্প দিনেই এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই ব্যাংককে ধ্বংস করেছে। পরে এক-এক করে দেশের সব ব্যাংকের টাকা আওয়ামী লীগ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে সচল করতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা: তাহের বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। পরিবর্তিত পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের দেশপ্রেম বুকে লালন করে ব্যবসা করার অনুরোধ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় ব্যবসায়ী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবদুস সালাম, এফবিসিসিআইর পরিচালক আলহাজ এনায়েত উল্ল্যাহ, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ব্যবসায় বিভাগের সেক্রেটারি ছগির বিন সাইদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা মেজবাহ উদ্দিন সাইদ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নেতা আইয়ুব আলী ফরাজী, হামিদুর রহমান সোহাগ, রাশেদুল হাসান রানা, রিহ্যাবের কার্যনির্বাহী সদস্য ড. হারুনুর রশিদ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নেতা লায়ন সবুজ সর্দার প্রমুখ। সমাবেশে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল-আমিন, মহানগরী দক্ষিণের সহকারী অফিস সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন, সহকারী প্রচার ও মিডিয়ার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান, ইসলামিয়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসনাত মো: মুর্তজাসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, একটি গতিশীল ও শক্তিবান একটা ব্যবসা গড়ে তুলতে প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব। আমাদের দেশের সব অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনে দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা বসে আছেন। দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব ছাড়া কোনোভাবেই গতিশীল অর্থ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। গত ১৬ বছর দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ছিল না। ভ্যাট ও ট্যাক্সের নামে ঘুষ, কমিশন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে সব অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও সৎ ব্যক্তিরাই নেতৃত্ব দেবে। আর কোনো সালমান এফ রহমান, এস আলম সৃষ্টি হতে দেয়া হবে না।
তিনি আগামীর বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতে ইসলামীর সাথে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশে ব্যবসা ছিল কারুনের গোষ্ঠীর দখলে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা ওসমান (রা:) মতো সৎ ও আদর্শবান হবে। সুদমুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ধারক ও বাহক হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শহীদ মীর কাশেম আলীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আলোকিত করেছেন। আর হাসিনা এবং তার চাটুকারেরা দেশের সম্পদ লুট করে অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করতে হলে ব্যবসায়ীদের অগ্রণী ভূমিকা প্রয়োজন। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে বিশ্বের রোলমডেল। বিজ্ঞপ্তি।
বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্য অটুট রাখতে হবে : মাওলানা মা’ছুম
গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেছেন, এখতেলাফ থাকলেও ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের ঐক্য অটুট রাখতে হবে। শুধু বাহ্যিকভাবে ঐক্য হলেই চলবে না, মনের দিক থেকে ঐক্য হতে হবে। এই ঐক্য এখন সময়ের দাবি। কারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দ্বারা এ দেশে ইসলামের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, আলেম-ওলামা সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছেন। আলেমদের প্রতি এমন আচরণ করা হয়েছে, যা পশুর সাথেও হয়নি। আল্লাহ তায়ালা মজলুমের চোখের পানি কবুল করেছেন বলেই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গতকাল শনিবার সকালে টঙ্গীর তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবুল হাসেম খান, মাওলানা মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, নয়াটোলা কামিল মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস আল্লামা মুনির আহমদ খান, গাজীপুর মহানগর হেফাজত ইসলামের সহসভাপতি মুফতি লেহাজ উদ্দিন, গাজীপুর মহানগর বেফাক সেক্রেটারি মাওলানা ফজলুর রহমান মুন্সী, আম্বরশাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুর রহিম আল মাদানী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগরের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হোসেন আলী, আফজাল হোসেন, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য সালাহউদ্দিন আইউবী, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমিরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাওলানা মা’ছুম আরো বলেন, ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব অনেক। অতীতেও এ উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালিমের বিরুদ্ধে বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছেন, তারা ত্যাগ ও কোরবানির পাশাপাশি ইলম ও হেকমতের সাথে মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব দিয়েছেন। মোজাদ্দিদে আলফেসানি, শায়েখ আহমদ সারহিন্দ, সৈয়দ আহমদ বেরলভীসহ (রহি:) ওলামায়ে কেরাম সামনে থেকে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রহিম আল মাদানী বলেন, ওলামায়ে কেরাম এক হলে এ দেশে আর কোনো অপশক্তি সামনে দাঁড়াতে পারবে না। আলেমরা ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে ইসলাম বিদ্বেষীরা কে আলিয়া, কে কওমি, কে ওহাবী, কে সুন্নি তা দেখবে না। সবাইকে ধরে জবাই করবে। কাজেই সব ইসলামী দল এক না হলে দিবাস্বপ্ন দেখে লাভ নাই। তিনি বলেন, বিগত দিনে পুলিশ আলেমদের পাহারা দিয়ে অপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement